• লাস্ট বেঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছায় না আওয়াজ গলায় সাউন্ড বক্স ঝোলালেন শিক্ষক
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: প্রতি ক্লাসে ৭০ থেকে ৮০ ছাত্রছাত্রী। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গলার আওয়াজ পিছনের বেঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছত না। অতিরিক্ত চিৎকার করতে গিয়ে গলা যেত ভেঙে। অন্যদিকে বাচ্চাগুলোর কান পর্যন্ত স্পষ্ট পৌঁছত না পড়ানোর বিষয়। বিষয়টি ভাবাচ্ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষকে। অবশেষে সমস্যা সমাধানে একটি উপায় বের করে স্কুল। ছোট আকারের সাউন্ড সিস্টেম গলায় ঝুলিয়ে রাখছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মাইক্রোফোনে বলছেন কথা। সেই আওয়াজ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছচ্ছে পড়ুয়াদের কানে। এখন বাচ্চারা স্পষ্ট শুনছে। প্রশ্ন করছে। পঠনপাঠনের মান এক কৌশলে গিয়েছে বদলে।

    নয়া ধরণের এই উদ্যোগ নিয়েছে দেগঙ্গার দেউলিয়া জুনিয়র বেসিক স্কুল। মিনি সাউন্ড বক্স ব্যবহারের পর শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলছেন, ‘এই পদ্ধতি ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের অনেকটাই মনযোগী করেছে।’ দেউলিয়া স্কুলের পড়ানোর খ্যাতি আছে। প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া সংখ্যা ৪৩১। দু’জন শিক্ষিকা। পাঁচজন শিক্ষক। শিক্ষকরা বলছেন, ‘আগে ক্লাসে পড়ানোর সময় অনেক জোরে কথা বলতে হত। গলা ফেটে গিয়ে পড়ানোর গতি ও মান দুটোই হত খারাপ। এখন সাউন্ড বক্স ব্যবহার করছি বলে চিৎকার করতে হয় না। শিশুরাও পড়ানো ঠিকমতো শুনে প্রশ্ন করে। শিখতে আগ্রহী হচ্ছে তারা।’ শিক্ষিকা অন্তর্লীনা দাস বলেন, ‘এখন ক্লাসে সবাই শুনতে পায়। কোনও বাচ্চা বাদ পড়ে না। শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ প্রাণ পেয়েছে।’ ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক শিবাজী মণ্ডল বলেন, ‘উদ্দেশ্য ছিল, প্রতিটি পড়ুয়া সমানভাবে আমাদের কথা শুনতে পাক। এই ব্যবস্থার সুফল পাচ্ছি।’ 

    রাজু দাস নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে এখন ক্লাসে শেখা বিষয়গুলি বাড়ি এসে গড়গড় করে বলে। আগে কখনও এমন করত না। সরকারি স্কুলে এ ধরনের উদ্যোগ দেখে আমরা আশ্চর্য।’ সুপ্রিয়া সাধুখাঁ নামে অন্য এক অভিভাবক বলেন, ‘ছোট হলেও এমন প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপ বড় প্রভাব ফেলতে পারে তা দেখা গেল। সরকারি স্কুলে যখন পড়ুয়া সংখ্যা তলানিতে সে সময় এই ভাবনা দিশা দেখাচ্ছে। আমার ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওর পড়াশোনায় মনযোগ বেড়েছে।’ বেড়াচাঁপা চক্রের এসআই শান্তিগোপাল দাস বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উদ্যোগ অভিনব। এই ভাবনাকে স্বাগত।’
  • Link to this news (বর্তমান)