পর্যটনে নবদিগন্ত, ডিসেম্বরে শেষ হবে বারাকপুরের উৎসধারা প্রকল্পের কাজ
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের উৎসধারা প্রকল্পের সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করল অর্থদপ্তর। এই প্রকল্পের খরচ ২৪ কোটি থেকে বেড়ে দাঁড়াল ৩০ কোটি টাকা। বারাকপুরের গান্ধীঘাট সংলগ্ন এই প্রকল্পে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জল জমা। একটু বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। এই জল বের করতে তিনটি বিশেষ পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর জন্য তিন কোটি টাকা অনুমোদিত হয়েছে। পূর্তদপ্তর এই পাম্পগুলি বসাবে। তবে এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে সেচদপ্তর। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পরের তিন বছর রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্ব সামলাবে ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন।
২০১৬ সালে এক প্রশাসনিক বৈঠকে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। দৃষ্টিনন্দন এই প্রকল্পে ৭০ ফুট উচ্চতার ক্লক টাওয়ার এবং একটি সূর্য ঘড়ি সকলের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। ক্লক টাওয়ারের গায়ে এখন রংয়ের প্রলেপ পড়ছে। আর সূর্য ঘড়ি এরাজ্যে কোথাও নেই।
বারাকপুরের গান্ধীঘাট থেকে মঙ্গল পান্ডে ঘাট পর্যন্ত গঙ্গার পাড়ে মনোরম পরিবেশে মানুষ যাতে প্রাতর্ভ্রমণ বা সান্ধ্য ভ্রমণ করতে পারেন, সপরিবারে দিনভর কাটাতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই তৈরি এই প্রকল্প। নির্মীয়মাণ স্বদেশি গেট পার করে প্রকল্প এলাকায় ঢুকলেই দেখা যাবে মনোরম দৃশ্য। চারদিকে গাছের সমাহার। গঙ্গার পাড়ে ঘোরা, খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটা— সবই করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। তবে টিকিট কাটতে হবে। ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার পেরলেই দেখা মিলবে ৭০ ফুটের ক্লক টাওয়ার। যেখানে জিপিএস ঘড়ি থাকবে। চারদিক থেকে দেখা যাবে সেটি। সিঁড়ি দিয়ে উপরেও ওঠা যাবে। এছাড়াও থাকবে এগজিবিশন সেন্টার, যেখানে তুলে ধরা হবে বীর সেনানি মঙ্গল পান্ডে সহ বারাকপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস। থাকবে ফুড কোর্ট, হস্তশিল্প সহ বিভিন্ন পণ্যের স্টল।
দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকবে গান্ধী গেট, শিশুদের জন্য পার্ক, পিকনিক করা বা নিছক আড্ডা মারার ব্যবস্থা। গঙ্গার ধার ঘেঁষে হাঁটার সুব্যবস্থাও থাকছে। থাকবে মুন বিচ ও সূর্য ঘড়ি। এটি পর্যটন দপ্তরের প্রকল্প হলেও পূর্তদপ্তর বাস্তবায়ন করছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন সরেজমিনে দেখে কী ধরনের গাছ বসবে, নেতাজি, গান্ধীজির মূর্তি কেমন হবে, তার রূপরেখা ঠিক করে দিয়েছেন। আরও আগেই এই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির জল জমা এবং গঙ্গার ভরা কোটালের কারণেই মন্থর হয়েছে কাজ। ফলে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে গিয়েছে। পর্যটকদের কাছে এটি গন্তব্যস্থল হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন আধিকারকিরা। তাঁদের মতে, সারাদিন কাটানোর মতো শিক্ষামূলক ভ্রমণের একটি জায়গা হয়ে উঠবে বারাকপুরের এই উৎস ধারা প্রকল্প। - নিজস্ব চিত্র