• বিদেশি হিন্দি স্কলারকে দেশে ঢুকতে বাধা, প্রশ্নে সরকার
    এই সময় | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: সপ্তাহ খানেক আগে ভিসার নিয়ম লঙ্খনের অভিযোগে দিল্লি থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল হিন্দি স্কলার ফ্রাঞ্চেস্কো ওরসিনিকে। দিল্লিতে একটি সেমিনারে অংশ নিতে এ দেশে এসেছিলেন তিনি। তবে একজনের মেধার থেকেও তাঁর একটা ‘তুচ্ছ’ নিয়ম লঙ্ঘনকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া নিয়ে সমালোচনায় সরব হলেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। তিনি বললেন, ‘আরও উদারপন্থী ও প্রগতিশীল হওয়া প্রয়োজন ভারতের প্রশাসনিক চিন্তাধারা।’

    গত ২১ অক্টোবর হংকং থেকে দি‍ল্লি আসেন ওরসিনি। কিন্তু বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকিং–এ ভিসার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তাঁকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেই সেখানকার উচ্চপদস্থ এক আধিকারিক জানান, চলতি বছর মার্চে ইমিগ্রেশন ব্ল্যাকলিস্টে ওরসিনির নাম ছিল। তাই তাঁকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পরে বিষয়টির সমালোচনা করে সংবাদপত্রে একটি কলাম লেখেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। আর্টিক্যাল প্রকাশের পরেই ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। ওই কলাম সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে স্বপন লেখেন— ‘যেখানে ভিসার সম্মতি দেওয়া দেশের কর্তব্য, সেখানে একজনের মেধাকে কেন শুধুমাত্র কয়েকটি নিয়মকানুনের ভিত্তিতে দেখা হবে? একটা সামান্য কারণে ওই বিদেশি অধ্যাপককে দেশে ঢুকতে না–দেওয়ার ঘটনায় তো দেশেরই ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।’

    সেই পোস্টটি রি–শেয়ার করে থারুর তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘আমি স্বপনের মতকে সমর্থন করি। একটা তুচ্ছ নিয়মভাঙার জন্য একজন অধ্যাপককে দেশে ঢুকতে দেওয়া হলো না। যা ভারতের সংস্কৃতি ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলবে। বিদেশি জার্নালে প্রকাশিত ভারত সম্পর্কিত নেতিবাচক আর্টিকেলের থেকেও এই ঘটনা বেশি লজ্জাজনক।’ তাঁকে ভারত থেকে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে অবশ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ যুক্তি দিয়েছেন— ট্যুরিস্ট ভিসা হোল্ডার ওরসিনি চলতি বছরেই ভিসার নিয়ম ভেঙেছিলেন। ফলে আন্তর্জাতিক ভিসার নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ করা হয়েছিল, এতে কোনও ভুল নেই। তবে একটি সূত্রের দাবি, ওরসিনিকে যখন ফেরত পাঠানো হয়, তখনও তাঁর কাছে পাঁচ বছরের জন্য বৈধ ট্যুরিস্ট ই–ভিসা ছিল।

    ইতালির আদি বাসিন্দা ওরসিনি এখন লন্ডনে থাকেন। লন্ডন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড অাফ্রিকান স্টাডিজ়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। এর আগে তিনি কেমব্রিজে শিক্ষকতা করতেন। মূলত হিন্দি ভাষায় গবেষণা ও তাঁর বইয়ের জন্য ওরসিনির বিশ্বব্যাপী খ্যাতি। তাঁর মতো একজন গুণীব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ–ও। তাঁর মন্তব্য, ‘প্রফেসর ওরসিনি ভারতীয় সাহিত্যের একজন বিদগ্ধ পণ্ডিত। তাঁর মেধা এবং কাজ আমাদের নিজেদের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতিকে বুঝতেই আরও সাহায্য করেছে। তাঁকে তুচ্ছ যুক্তিকে ফেরত পাঠানোর ঘটনা প্রমাণ করে আমাদের সরকার আতঙ্কগ্রস্ত, আত্মবিশ্বাসহীন।’

  • Link to this news (এই সময়)