• স্কুলের ৩ জন শিক্ষকই বিএলও, শিক্ষকদের আটকে রেখে বিক্ষোভ অভিভাবকদের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বিএলও-দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করতে হবে। স্কুল শিক্ষকদের কাঁধেই পড়েছে এই দায়িত্ব। তাঁরাই বিএলও হিসেবে কাজ করবেন। আর এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের স্কুলে আটকে রাখলেন অভিভাবকরা।

    মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার চণ্ডীগড় স্পেশাল ক্যাডার এফপি স্কুলে। স্কুলে মাত্র তিনজন শিক্ষক। তিনজনই বুথ লেভেল অফিসার। এসআইআর কাজে তাঁরা বেরিয়ে গেলে বাচ্চাদের পড়াশোনা কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকরা।

    গাইঘাটার ওই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ১৫০ জন। আর শিক্ষক মাত্র তিনজন। তিনজনই বিএলও-এর দায়িত্ব পেয়েছেন। আর এতেই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার অভিভাবকরা স্কুলের গেটে তালা দিয়ে দেন। সেই সঙ্গে বিক্ষোভও দেখান। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আটকে রাখা হয় শিক্ষকদের।

    মানসকুমার মণ্ডল নামে এক অভিভাবক জানিয়েছেন, ‘আমাদের স্কুলে দীর্ঘ দিন ধরে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। স্কুলে দেড়শো জন পড়াশোনা করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা গরিব এলাকা। গৃহশিক্ষক রেখে বাচ্চাদের পড়ানোর মতো সবার ক্ষমতা নেই। আমরা প্রত্যেকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য স্কুলের শিক্ষকদের উপর নির্ভরশীল। স্কুলটাও ভাল। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত শিক্ষক যদি বিএলওর কাজ করতে বেরিয়ে পড়েন, বাচ্চাদের পড়াশোনার কী হবে?’

    অভিভাবকদের দাবি অমূলক নয় বলে জানিয়েছেন ওই স্কুলের শিক্ষকরা। ধীমানচন্দ্র রায় চণ্ডীগড় স্পেশাল ক্যাডার এফপি স্কুলের শিক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, ‘গেটে তালা দিয়ে দিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। আমরা তিন জন শিক্ষকই বিএলও-র দায়িত্ব পেয়েছি। পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়, এই দাবিতে ওঁরা আমাদের আটকে রাখেন।’  অভিভাবকদের চিন্তাকে সঠিক বলে সম্মতি জানিয়েছেন তিনি। সামনেই পড়ুয়াদের পরীক্ষা।

    তবে একজন শিক্ষককে বাইরে থেকে আনা হচ্ছে বলে খবর। তিনি পড়াবেন। তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে এসআইআরের কাজে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ধীমানচন্দ্র। তিনি বলেন, ‘বিডিও একটি বৈঠক করবেন। তারপর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

    শিক্ষকদের উদ্ধার করতে স্কুলে যান গাইঘাটা থানার পুলিশ এবং জয়েন্ট বিডিও ময়ূখ বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিভাবকদের আশ্বস্ত করা হয়। আশ্বাস পেয়ে গেটের তালা খুলে দেন অভিভাবকরা। তবে শিক্ষক না আসা পর্যন্ত এখনই দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না গাইঘাটার অভিভাবকরা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)