• চেক দিয়ে ১৪৫৭৩০০০ টাকা জালিয়াতি, বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যানকে তলব মহারাষ্ট্র পুলিসের
    ২৪ ঘন্টা | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • অরূপ লাহা: ব্যাঙ্কে জালিয়াতি কাণ্ডে এবার বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যানকে তলব করল মহারাষ্ট্র পুলিস। বর্ধমান পুরসভার চেক ব্যবহার করে প্রায় ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় তদন্তের মহারাষ্ট্র পুলিস পুরসভার চেয়ারম্যানকে ডেকে পাঠাল। বুধবার চেয়ারম্যানকে মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখার সামনে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

    উল্লেখ্য, এর আগে ওই চেক জালিয়াতিকাণ্ডে পুরসভার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারকেও ডেকে পাঠানো হয়। তিনি ইতিমধ্যেই তদন্তকারী সংস্থার অফিসে হাজির হয়েছেন। তাঁর সইয়ের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। চেকে সই আছে এমন আরও এক পুরসভার আধিকারিককে তদন্তের প্রয়োজনে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় পুরসভার অন্দরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শোরগোল পড়ে গিয়েছে কাউন্সিলর ও কর্মীদের মধ্যে।

    চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, চেকে সই থাকার জন্য তা মিলিয়ে দেখতে তদন্তকারী সংস্থা ডেকে পাঠিয়েছে। তদন্তে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে। তবে তিনি তার আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। 

    প্রসঙ্গত, পুরসভার দু’টি চেক ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের হিঙ্গনঘাট শাখা থেকে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা তোলা হয়। চেক দুটি একটি স্বর্ণবিপণির নামে কাটা। চেকের একটিতে ৯৭ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা স্বর্ণবিপণিটিকে পেমেন্ট করা হয়। সেই চেকে চেয়ারম্যান ও পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারের সইয়ের 'মতো' রয়েছে। অপর একটি চেকে একই স্বর্ণবিপণিকে ৪৮ লক্ষ ২১ হাজার টাকা পেমেন্ট করা হয়। সেই চেকেও ফিনান্স অফিসার ও এগজিকিউটিভ অফিসারের 'মতো' সই রয়েছে।

    দু’টি চেক ব্যবহার করে কিভাবে স্বর্ণবিপণিকে পেমেন্ট করা হল তা নিয়ে নানা মহলে চর্চা চলছে। এর আগে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আর্থিক অপরাধ দমন শাখা পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করে। তদন্তের প্রয়োজনে তাকে মহারাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে। ব্যাঙ্ক থেকে পুরসভার কাছে চেক ব্যবহার করে টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। দু’টি চেকই তাদের হেফাজতে রয়েছে বলে ব্যাঙ্কে জানায় পুরসভা।

    পুর কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্কের কাছে টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি দেয়। ব্যাঙ্ক তা ফিরিয়েও দেয়। পরে ব্যাঙ্কের তরফে দু’টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিস মহারাষ্ট্র থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুরসভার ওই অস্থায়ী কর্মীকে ডেকে পাঠায়। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। টাকা তোলার বিষয়ে তার মোবাইলে মেসেজ আসে বলে দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। যদিও মোবাইলটি হ্যাক করা হয়েছে বলে ধৃতের আইনজীবীদের দাবি। গ্রেফতার এড়াতে আগাম জামিনের আবেদন করেন অভিযুক্ত। কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দেয় মহারাষ্ট্রের আদালত। 

    এনিয়ে সরব বিজেপি। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র কটাক্ষ করে বলেন, তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে ইডির রেড হচ্ছে প্রায় দিনই। আবার হয় তো কবে দেখা যাবে কোন কাউন্সিলের বাড়ি থেকে সোনা উদ্ধার হবে। সত্যি ঘটনা সামনে আসুক।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)