‘দল যদি চায়, আমি মুখ্যমন্ত্রী হব’, মিঠুনের মন্তব্যে শোরগোল বঙ্গ বিজেপিতে
প্রতিদিন | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
বাবুল হক, মালদহ: বঙ্গে আসন্ন বিধানসভা ভোট। সব পক্ষেরই প্রস্তুতি চরমে। চ্যালেঞ্জ জানাতে কোমর বাঁধছে বিরোধীরা। ছাব্বিশে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে বিজেপির মুখ কি শুভেন্দু অধিকারীই? তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে। আর এহেন চর্চার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব খোদ মিঠুন চক্রবর্তীকে। এক্ষেত্রে তাঁর দাবি, “দল যদি চায়, আমি মুখ্যমন্ত্রী হব। দল যাকে বলবে, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন।” আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে বঙ্গ বিজেপিতে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে শুভেন্দু অধিকারীকে নয়, মিঠুনকেই চাইছেন নেতা-কর্মীরা? নাকি মসনদে বসতে চাইছেন মিঠুন নিজেই? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে বঙ্গ বিজেপির মুখ হিসেবে ময়দানে নামতে চান এই বাঙালি অভিনেতা! যদিও এই বিষয়ে একেবারে ‘স্পিকটি নট’ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
সোমবার মালদহের সাহাপুরের একটি বেসরকারি হোটেলে গেরুয়া শিবিরের বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সেখানেই যোগ দেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী-সহ বঙ্গ বিজেপির একাধিক শীর্ষনেতা। আর সেই সভাতেই সরাসরি মিঠুনকে বাংলার আগামীর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন বিজেপি কর্মীরা। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁর স্পষ্ট জবাব, ”আমাদের পার্টিতে এই সব হয় না।” তবে কর্মীদের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী হবেন? এক্ষেত্রে তাঁর জবাব, ”আমাদের পার্টিতে সবাই লড়ে, এরপর জিতে আসলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমায় দল চাইলে আমিও হব, অন্যকে চাইলে উনি হবেন।”
এর আগেই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিজেপির মুখ কে তা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকেও। যদিও এহেন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে সেই সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেন, “এতগুলো রাজ্যে নির্বাচন লড়ছি। কোথাও কি কাউকে ‘মুখ’ করা হয়েছে?” দৃশ্যতই বিব্রত রাজ্য বিজেপির সভাপতি এই বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের উপর দায়িত্ব চাপিয়ে সেই সময় জানান, “পার্টি যদি মনে করে তাহলে করতেই পারে! এর মধ্যে দলের অন্দরেই মিঠুন চক্রবর্তীকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দেওয়া হল, তা নিয়ে বঙ্গ বিজেপিতে বিরাট শোরগোল। তাহলে দলের কর্মীরাই চাইছেন না শুভেন্দু অধিকারীকে? আবার রাজনৈতিক মহলের একাংশের পর্যবেক্ষণ, মিঠুনের মন্তব্যে কার্যত বিব্রত হয়ে পড়লেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতারাই।
বঙ্গ বিজেপিতে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। দিলীপ ঘোষ থেকে শুভেন্দু কিংবা শমীক, নেতাদের সমীকরণ নিয়ে বারবার চর্চা হয়েছে। কখনও কখনও নেতাদের দূরত্ব এতটাই বেড়েছে যা লোকচক্ষু এড়ানো যায়নি। এবার মিঠুনের বক্তব্যে জল্পনা বাড়ছে আবারও।