বিয়ের পর নামবদল বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর, পরিচয়পত্রে শ্বশুর-শাশুড়ি হয়ে গেলেন বাবা-মা!
প্রতিদিন | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: ছিল রুমাল হয়ে গেল বেড়াল! বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ। এরপরই বাংলার এক তরুণীকে বিয়ে। শুধু তাই নয়, এদেশে থাকতে হলে তো পরিচয়পত্র প্রয়োজন! সেজন্য তৈরি করা হয়েছিল পরিচয়পত্রও। সেজন্য ভোটার কার্ডে শ্বশুরমশাইকে বানানো হল বাবা! শাশুড়ি পরিচয়পত্রে হয়ে গেলেন মা! শুধু তাই নয়, ওই অনুপ্রবেশকারীর নামও বদল হয়ে যায় বলে অভিযোগ। এসআইআর আবহে এই ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জে।
জানা গিয়েছে, আদপে বাংলাদেশের বাসিন্দা রাশিদুল গাজি। সাতক্ষীরা জেলার দেভাটা থানার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি ২০১২ সালে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। বসিরহাট এলাকা দিয়ে আসার পর কাজের সূত্রে তিনি তামিলনাড়ু চলে গিয়েছিলেন বলে খবর। সেখানেই উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জের শ্রীধরকাটি এলাকার বাসিন্দা রুমেশার সঙ্গে পরিচয় তাঁর। ওই তরুণীও সেখানে কাজের সূত্রে ছিলেন বলে খবর। দু’জনের আলাপ ও পরবর্তীতে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ওই তরুণীর সঙ্গে হিঙ্গলগঞ্জে এসেছিলেন রাশিদুল। প্রণয়ের পরিণতিতে বিয়ের কথাবার্তাও পাকা হয়। কিন্তু সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। ভাবী জামাই তো বাংলাদেশের বাসিন্দা! এদেশের পরিচয়পত্র তো প্রয়োজন। এদিকে সোজাপথে তো ওই পরিচয়পত্র পাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে ঘুরপথে কি তৈরি হবে ওই পরিচয়পত্র? জানা গিয়েছে, বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই নাম বদল হয় রাশিদুলের। ভোটার কার্ড বানিয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর নতুন নাম হয় আবদুল গাজি! তারপরেও চমক আছে। পরিচয়পত্রে বাবা-মায়ের নাম প্রয়োজন। তাঁরা আসবেন কী করে? সেখানে কার্যত মুশকিল আসান হন শ্বশুর-শাশুড়ি। পরিচয়পত্রে শ্বশুর হয়ে যান বাবা, শাশুড়ি মা! শুধু তাই নয়, পশ্চিমপাড়ার ২০৮ নম্বর বুথের ভোটার তালিকায় ওই ব্যক্তির নামও উঠে যায় বলে অভিযোগ।
বর্তমানে বাংলায় এসআইআর আবহে ভুয়ো ভোটার, অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গ উঠেছে। বসিরহাট এলাকার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ যাওয়ার সময় একশোর উপর অনুপ্রবেশকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। এবার এই রাশিদুল গাজির প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোড়। সিপিএম সেসময় ওই অনুপ্রবেশকারীকে ভুয়ো ভোটার কার্ড পাইয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও সিপিএমের দাবি তৃণমূল এই কাজ করেছে। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। বিষয়টি প্রশাসনের গোচরে এসেছে বলে জানা গিয়েছে।