পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ নিবিড় সংশোধন শুরু, বাড়ছে আতঙ্ক ও তৎপরতা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ নভেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার থেকেই গোটা পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়ে গেল ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর। রাজ্যের ২৯৪টি আসনে সকাল থেকেই বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন এনুমারেশন ফর্ম। ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ চলছে জোরকদমে। দেশের আরও ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও একই দিনে শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া।
প্রসঙ্গত, এ বছর এসআইআর নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ভয় ও উদ্বেগ। কারণ ২০০২ সালের পর আবার বড়সড়ভাবে ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কমিশনের নির্দেশে পুরোনো তালিকার সঙ্গে বর্তমান তালিকার তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ রাজ্যে ভোটারের সংখ্যা সাড়ে সাত কোটিরও বেশি। প্রত্যেকের কাছে ফর্ম পৌঁছবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে কমিশন দ্বিগুণ সংখ্যক এনুমারেশন ফর্ম ছাপিয়েছে। যাঁরা কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার জন্য রাজ্যের বাইরে থাকেন, তাঁদের জন্য অনলাইনে ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা থাকলেও মঙ্গলবার থেকে সেটি চালু হয়নি। সিইও দপ্তর জানিয়েছে, কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে অনলাইন পরিষেবা দু’-এক দিন দেরিতে চালু হবে।
সিইও দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ২ কোটি ৪৫ লক্ষেরও বেশি ভোটারের তথ্য ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, যাঁদের তথ্য মিলে গিয়েছে, তাঁদের কাগজপত্র জমা দিতে হবে না। শুধু ফর্ম পূরণ করলেই চলবে। তবে যাঁদের তথ্য মিলছে না, তাঁদের সব নথি নতুন করে যাচাই করতে হবে।
আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিতরণ। এরপর ৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। অভিযোগ জানাতে সময় দেওয়া হয়েছে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। সবশেষে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।
এদিকে একাধিক রাজনৈতিক দলের তরফে বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ-২)-দের নাম নথিভুক্ত করা হলেও সংখ্যাটি মাত্র ৪১ হাজার ৮০০। রাজ্যে যেখানে বুথ রয়েছে ৯৪ হাজারের বেশি, সেখানে এত কম বিএলএ নথিভুক্ত হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে।
এসআইআরের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে বুধবার দিল্লি থেকে রাজ্যে আসছে নির্বাচন কমিশনের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে গিয়ে তাঁরা বিএলওদের কাজ পর্যালোচনা করবেন। শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে থাকবে এই দল।
উল্লেখ্য, এসআইআর শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের একাংশ ভোটারের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। নাম বাদ পড়ে গেল কি না, তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতায় মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতায় পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রেড রোডে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়েছে মিছিল, শেষ হবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে। মিছিলে অংশ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।