৩০ হাজারের ফোন নাপসন্দ, আইফোন না পেয়ে ‘আত্মঘাতী’ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী
প্রতিদিন | ০৫ নভেম্বর ২০২৫
দেবব্রত মণ্ডল, ক্যানিং: স্মার্টফোন আছে। কিন্তু আইফোন দিতেই হবে। বাড়ির লোকের কাছে সেই বায়না করেছিল কিশোর। কিছুটা সময় চাইলে তাও দিতে রাজি ছিল না দশম শ্রেণির ওই ছাত্র। জেদের বশে নিজেকেই শেষ করে দিল সে! মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। ওই কিশোরের গলায় ফাঁস দেওয়া দেহ উদ্ধার হয়েছিল।
দামী মোবাইল ফোন বাড়িতে রয়েছে। কিন্তু আইফোন নেই। সেই আইফোন কিনে দেওয়ার জন্য পরিবারে জানিয়েছিল মাধ্যমিক পড়ুয়া। পরিবারের লোকজন এখনই কিনে দিতে রাজি হয়নি। সেই জেদে ‘আত্মঘাতী’ হল ওই মাধ্যমিক পড়ুয়া। ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল দেহ। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকালে কুলতলি থানার গোপালগঞ্জ পঞ্চায়েতের শানকিজাহান এলাকায়। এর জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কুলতলি থানার পুলিশ এলাকায় গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই জয়নগরের নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা ভাস্কর দাস পরিযায়ী শ্রমিক। কয়েক মাস আগে তাকে পরিবারের লোকজন প্রায় ৩০ হাজার টাকার দামী মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছিল। কিছুদিন আগেই ওই কিশোরের জন্মদিন ছিল। তখনই আইফোন কিনে দেওয়ার জন্য সে বাড়ির লোকের কাছে বায়না জুড়েছিল। কিন্তু অত টাকা দিয়ে এখনই আইফোন কিনে দেওয়ার সামর্থ, পরিস্থিতি ওই পরিবারে ছিল না। সেই কথা ওই কিশোরকে বলেও লাভ হয়নি!
ওই কিশোরের কাকা সুশীল দাস বলেন, “ভাইপো পড়াশোনায় খুব ভালো ছেলে ছিল। নিমপীঠের হোস্টেলে থাকত। কয়েকদিন ধরে ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করছিল না। এমনকী, হোস্টেলেও যেত না। এই নিয়ে ওর মা বকেওছিল। কিন্ত ভাইপো আইফোন নেওয়ার ব্যাপারে জোরাজুরি করছিল। ওকে অনেকবার বোঝানোও হয়েছিল। এদিন সকালে ছাদে উঠে ঘরে ঢুকে আত্মহত্যা করে। এইভাবে নিজের জীবন শেষ করে দেবে আমরা ভাবিনি।” ঘটনায় শোকগ্রস্ত ওই পরিবার। এলাকাতেও শোকের ছায়া। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।