নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: গ্রাম থেকে শহর, মঙ্গলবার থেকে বাড়ি বাড়ি পৌঁছতে শুরু করলেন বুথস্তরের আধিকারিক বা বিএলওরা। এদিন থেকেই জেলাজুড়ে ইনিউমারেশন ফর্ম বিল শুরু হয়েছে। প্রথমদিন কোথাও ফর্ম বিলি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়নি বিএলওদের। জেলায় বিক্ষোভেরও কোনও খবর নেই। তবে, বিএলওরা এসআইআরের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন লাটে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বীরভূমের জেলাশাসক ধবল জৈন বলেন, বিএলওরা বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলেন। প্রথমদিন শান্তিপূর্ণভাবেই এসআইআরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন অধিকাংশ জায়গাতেই ব্লক অফিস থেকে ইনিউমারেশন ফর্ম তুলতে তুলতেই একবেলা চলে যায় বিএলওদের। তারপর তাঁরা সেই ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যান। তবে, প্রথমদিন বেশি সংখ্যক ফর্ম বিলি করতে পারেননি বিএলওরা। এক একজন বিএলএ মাত্র পাঁচ-দশটি করে ফর্ম বিলি করেছেন। রামপুরহাট-১ বিডিও অঙ্কুর মিত্র বলেন, বিএলওরা কাজে নেমেছেন। তবে এদিন খুব বেশি ফর্ম বিলি হয়নি। আজ, বুধবার থেকে বিএলওরা পুরোদমে কাজে নামবেন বলে আশাবাদী প্রশাসন।
মঙ্গলবার সিউড়ি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত লালকুঠিপাড়া এলাকায় ইনিউমারেশন ফর্ম বিলি করা হয়। সিউড়ির মধ্যে লালকুঠিপাড়ার বেবি বেগমের হাতেই প্রথম ইনিউমারেশন ফর্ম তুলে দেওয়া হয়। হাতে ফর্ম পেয়ে বেবি বলেন, আমি আগেই ২০০২সালের তালিকা দেখে নিয়েছিলাম। তালিকায় আমার নাম আছে। তাই কোনও চিন্তা ছিল না। তবুও যা সব শুনছি একটু চিন্তা তো ছিলই। কিন্তু বিএলওর সঙ্গে কথা বলে সেই ভয় কেটে গিয়েছে। বিএলও মনীষা মুখোপাধ্যায় এদিন বলেন, প্রথমদিন বেশি ফর্ম পাইনি। মাত্র পাঁচটি ফর্ম পেয়েছিলাম। সবগুলোই দিয়ে দিয়েছি। বীরভূমের অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) সৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রথমদিন কাজ বুঝে নিতে সকলেরই কিছুটা সময় লাগছে। তবে, আশা করছি আগামীতে আর এই সমস্যা থাকবে না। সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। এদিন বিএলওদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বুথ লেভেল এজেন্টদেরও(২) দেখা মিলেছে।
এসআইআর নিয়ে আতঙ্ক কাটাতে তৃণমূলের তরফে প্রতি অঞ্চলেই সহায়তা ক্যাম্প খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার বোলপুরের রূপপুরে সহায়তা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। চন্দ্রনাথ বলেন, অনেক জায়গায় বিএলওরা বিএলএ-২’দের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। আমরা মৌখিক সাবধান করেছি। এর পুনরাবৃত্তি হলে কমিশনে নালিশ জানাব। প্রায় প্রতি বিধানসভাতেই তৃণমূলের তরফে ওয়াররুম খোলা হয়েছে। সিউড়িতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ওয়াররুম খোলা হয়েছে। বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা কড়া নজর রাখা হচ্ছে। এসআইআরের কাজকর্মের জন্য বহু স্কুলে পঠনপাঠনে প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রামপুরহাট পশ্চিম চক্রের বালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক এবং তেঁতুলপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জোয়ালভাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’জন করে শিক্ষক রয়েছেন। প্রত্যেকেই বিএলও হিসেবে যোগ দিয়েছেন। সেকারণে এদিন সকালে স্কুল হয়। শিক্ষকদের দাবি, আগামী দিনেও সকালে স্কুল আর বেলায় ভোটের কাজ করে সামাল দিতে হবে।