হরিণঘাটা: রাস্তা মরণফাঁদ, কেন্দ্রের টাকা না মেলায় অর্ধেক সংস্কারের সিদ্ধান্ত
বর্তমান | ০৫ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কল্যাণী: জরাজীর্ণ বিভিন্ন রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে ওষ্ঠাগত প্রাণ। সংস্কারের অভাবে জায়গায় জায়গায় খানাখন্দ তৈরি হয়ে হাতছানি দিচ্ছে মৃত্যুফাঁদ। কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে গ্রামসড়ক যোজনার টাকা না পাওয়াতেই এই দশা বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। অগত্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্লকস্তরেই অর্থ বরাদ্দ করে অর্ধেক রাস্তা সারানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
হরিণঘাটা ব্লকের কাষ্ঠডাঙা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিমতলা থেকে পোড়া মহেশ্বরতলা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটারের রাস্তা বেহাল। বৃষ্টি না হলেই ধুলোর ঝড়, আর সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা আর গর্ত মিলিয়ে রাস্তা হয়ে ওঠে দুর্ভোগের অন্য নাম। বহুদিন ধরেই অবহেলিত এই পথ। অথচ গ্রামাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে যে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার আওতায় তৈরি হয়েছিল এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, তার এই দশা দেখে নাগরিকদের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাস্তাটির উপর নির্ভর করেন উত্তর ব্রহ্মপুর, গড়ালি, রুস্তমনগর, সরাপুরসহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দা। এলাকার স্কুলগুলিতে প্রতিদিন শত শত ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করে এই পথ দিয়েই। নিমতলা রঙ্গেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, রমেশচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়, বিশ্বনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়— এমন আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের ভরসা এই রাস্তা। এমনকি কাষ্ঠডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে পৌঁছনোর প্রধান মাধ্যমও এটিই। ফলে রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে প্রায়শই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষাকালে জল দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায়। কোথাও কোথাও চাকা পুরোপুরি কাদায় ডুবে যায়। পথের বেহাল অবস্থার জেরে দুর্ঘটনাও অস্বাভাবিক নয়। বাইরে বেরতেই আতঙ্ক লাগে, বলছেন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, অবিলম্বে পুরোটাই সংস্কার করা না হলে ভোগান্তির শেষ থাকবে না। গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ত সঞ্চালক শুভদীপ সাহা বলেন, এই রাস্তা কেন্দ্রের প্রকল্পে হলেও সংস্কারের জন্য কোনও বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। ব্লকের অনগ্রসর উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রথম ধাপে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার মেরামতির জন্য ৪৮ লক্ষ টাকা অনুমোদিত হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।তবে বাসিন্দাদের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে— ধাপে ধাপে নয়, গোটা সাত কিলোমিটার রাস্তা একযোগে মেরামত না হলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। তাঁদের আবেদন, গ্রামাঞ্চলে যোগাযোগের প্রাণ এই সড়কের দ্রুত পূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে প্রশাসন যেন মানুষের স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়।