• সল্টলেকে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধারে নাম জড়াল বিডিও-র
    এই সময় | ০৫ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, রাজারহাট: সল্টলেক থেকে 'অপহৃত' এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হলো নিউ টাউনের যাত্রাগাছি এলাকায়।

    গত বৃহস্পতিবার সকালে স্বপন কামিলা (৪৮) নামে ওই ব্যবসায়ীর ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে স্থানীয় খালপাড়ে। আদতে মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা হলেও ব্যবসায়িক সূত্রে সল্টলেকে থাকতেন স্বপন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, তাঁকে খুন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নিউ টাউন থানার পুলিশ। গত ৩১ অক্টোবর ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর শ্যালক দেবাশিস কামিলা। লিখিত অভিযোগে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন উত্তরবঙ্গের রাজগঞ্জের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) প্রশান্ত বর্মনের নাম। যদিও মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিডিও বলেন, 'আমার কোনও জায়গা নেই। বাড়ি নেই। অভিযোগ করা হলেই হবে নাকি?'

    বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রে জানানো হয়েছে, কিছুদিন আগে রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মনের শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকার বাড়ি থেকে বেশ কিছু সোনার গয়না চুরি যায়। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পারে, সল্টলেকের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে চুরি যাওয়া গয়না বিক্রি করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকে সেই খবর পেয়ে গিয়েছিলেন বিডিও।

    অভিযোগ, এরপরে গত ২৩ অক্টোবর নীল বাতি লাগানো গাড়িতে চেপে এক ব্যক্তি চলে আসেন সল্টলেকের দত্তাবাদে। সে দিন জমি সংক্রান্ত একটি কাজে স্বপন ওডিশা যাওয়ায় দোকান ঘরের মালিক গোবিন্দ বাগকে দিয়ে ফোন করানো হয় ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে। স্বপনকে দ্রুত ফিরে আসার কথাও বলা হয়। ২৮ অক্টোবর সকালে দু'জন সঙ্গীকে নিয়ে দত্তাবাদে ফেরেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। নিহতের শ্যালক দেবাশিস কামিলার অভিযোগ, 'জামাইবাবু দোকানে পৌঁছনোর ১০ মিনিটের মধ্যেই দুটি গাড়ি করে বেশ কিছু লোকজন হাজির হন। যার মধ্যে নীল বাতি লাগানো গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক নীচে নেমে নিজেকে বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলে পরিচয় দেন। তাঁরা কোনও বক্তব্য না শুনে স্বপন এবং দোকান ঘরের মালিক গোবিন্দকে তুলে নিয়ে চলে যান।'

    পরে সল্টলেকের নয়াবাদ এলাকায় গোবিন্দকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পরের দিন সকালে, অর্থাৎ ২৯ অক্টোবর, নিউ টাউনের নির্জন খালপাড় এলাকা থেকে একটি ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। নিখোঁজ স্বপনের ছবি দেখে দেহ শনাক্ত করে পরিবার। গত ৩১ অক্টোবর পুরো ঘটনা জানিয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দেবাশিস। মঙ্গলবার বিষয়টি নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়। ঘটনার এতদিন পরেও কেন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন স্বপনের পরিবারের সদস্যরা। ভাই রতন কামিলা বলেন, 'দাদাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশের উপরে আমাদের পূর্ণ আস্থ্য রয়েছে। আমরা সুবিচার চাইছি।'

    দত্তাবাদে স্বপনের দোকানের ঠিক পাশেই বাড়ি অনুপ মণ্ডলের। তিনি বলেন, 'প্রায় ১৩ বছর ধরে ওকে চিনি। কারও সঙ্গে কোনও বিবাদ কখনও দেখিনি। কেন এমন মানুষ খুন হলেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।'

    এ দিন অবশ্য অভিযুক্ত বিডিও নিজের বাড়ি থাকার কথাই অস্বীকার করেছেন। বিধাননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।

  • Link to this news (এই সময়)