• ‘মিরজাফরজি’ এজেন্সি পাঠাচ্ছেন! তোপ দেগে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
    এই সময় | ০৫ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর অফিসে কিছু দিন আগে ইডি তল্লাশি চালিয়েছিল। একই ভাবে পাসপোর্ট জালিয়াতি নিয়েও রাজ্যজুড়ে ইডি তদন্ত চালাচ্ছে। তৃণমূল নেতৃত্ব গত সাড়ে চার বছর ধরে বলে আসছেন, ২০২১–এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পরাজিত হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির মাধ্যমে প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে। গত লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সি গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছিল। ’২৬–এর বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, ততই রাজ্যে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। এই আবহে এজেন্সির অতি–সক্রিয়তা নিয়ে দলের নেতা–কর্মীদের ফের সতর্ক করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভয় না–পেয়ে নেতা–কর্মীদের আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলেছেন‍ তৃণমূলনেত্রী।

    কয়েক দিন আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সির পরিচয় দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার তিন তৃণমূল নেতা সুব্রত মণ্ডল, ফিরদৌসি বেগম ও বিভাস সর্দারের কাছে ফোন এসেছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনও অভিযোগ উঠেছে যে, এই তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে কলকাতায় রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মঙ্গলবার তৃণমূলের মহামিছিলের পরে জনসভায় মমতা তৃণমূল নেতাদের কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে নিয়ে ভয় না–পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় মিরজাফরজি এজেন্সি পাঠিয়ে দেন। আমাদের তিনজন বিধায়ককে পরশু (রবিবার) ফোন করেছে। ফেক এজেন্সি! ফোন করে বলে, তোমাদের বিরুদ্ধে সিবিআই কেস রয়েছে এত টাকা দাও। ইনকাম ট্যাক্স লেলিয়ে দেবো! আমরা এদের ধরব, মামলাও করব। ছাড়ব না। যদি কারও বাড়িতে ইডি–সিবিআই যায়, ভয় পাবেন না। আপনি আইনজীবীর পরামর্শ নেবেন।’

    তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গেরুয়া শিবিরই আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। মমতার কটাক্ষ, ‘কী গোদিবাবু, মিরজাফরবাবু টাকা রাখবেন কোথায়? কত বিদেশে পাচার করবেন? বিদেশ তো আস্তে আস্তে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’ কারও নাম না–করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই মমতা নিশানা করেছেন বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। কেন্দ্রীয় এজেন্সি নিয়ে দলের নেতা–কর্মীদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি গেরুয়া শিবির এজেন্সি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মানুষের তথ্য সংগ্রহ করছে বলেও তৃণমূলনেত্রী অভিযোগ করেছেন। ডায়মন্ড হারবারে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মমতার অভিযোগ।

    তাঁর দাবি, ‘কয়েক দিন আগে অভিষেকের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে একটি ক্যাম্প করতে গিয়েছে। বলেছে একটা ব্যাঙ্কের ক্যাম্প, আসলে ছুপা রুস্তম! বিজেপির এজেন্সি টাকা দিয়ে নিয়ে গিয়েছে ডেটা কালেকশন করার জন্য। রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া এটা করতে পারে না। দিল্লির কোনও একটি সর্বভারতীয় ইনস্টিটিউটের নামে (এরা) কোথাও চলে যাচ্ছে। বলছে, আপনার বাবার নাম, মায়ের নাম বলুন। সার্টিফিকেট দেখান। বয়স বলুন। এই সব সবাইকে দেবেন না।’ যদিও মমতার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এক প্রবীণ বিজেপি নেতার কটাক্ষ, ‘ওঁদের দলের নেতারা গোরু–কয়লা–বালি পাচারে অভিযুক্ত। শিক্ষা–পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতিতে জড়িয়ে তৃণমূল। ভয় পেয়ে এ সব বলছেন উনি!’

  • Link to this news (এই সময়)