সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাদ। আর তার মাঝে পড়ে খেসারত দিতে হল নাবালক পুত্রকে। ১০ বছরের ছেলেকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ছেড়ে দিয়ে এলেন ‘গুণধর’ বাবা! ভয়ে, আতঙ্কে রাতে কান্নাকাটি করতে থাকে ওই বালক। শেষপর্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষ তাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ ওই বালককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট সীমান্তে।
জানা গিয়েছে, ওই বছর দশেকের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থানার কাঠপোল এলাকায়। বাবা পিন্টু ঘোষ ও মা মাধবী ঘোষের মধ্যে প্রায়ই বিভিন্ন বিষয়ে বিবাদ হয় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি সেই বিবাদ চরমে উঠলে ছেলেকে শ্বশুরবাড়িতে রেখেই বাপেরবাড়িতে চলে এসেছিলেন মা। এর মধ্যে কয়েক দিন কেটে গিয়েছে। গতকাল, মঙ্গলবার রাতে বাবা পিন্টু ঘোষ ছেলেকে মায়ের কাছে রেখে আসতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মা ছেলেকে সঙ্গে রাখতে চাননি! এরপরেই এই ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত নেনে ছেলেটির বাবা। ব্যাগে জামাকাপড় আগে থেকে ভরাই ছিল। ছেলেকে পিছনে বসিয়ে বাইকের গতি তোলেন পিন্টু।
বাড়ির রাস্তা নয়, অন্য কোনওখানে বাবা যাচ্ছে। সেকথা বুঝতে পেরেও কিছু বলতে পারেনি ছোট্ট ওই ছেলে। রাতের অন্ধকারে বাবা ছেলেকে নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের বসিরহাট সীমান্তে পৌঁছে যান। ছেলেকে নামিয়ে দেওয়া হয় বাইক থেকে। বাবার কাজে হতচকিত হয়ে গিয়েছিল ছেলে। এদিকে ততক্ষণে রাতের অন্ধকারে সীমান্তের ধারে ছেলেকে রেখে বাবা বাইকের মুখ ঘুরিয়ে ফেলেছেন। ছেলের ডাককে উপেক্ষা করেই এলাকা ছাড়েন গুণধর ওই ব্যক্তি! রাতের মিশকালো অন্ধকার, ঠান্ডা, বাবা-মা-বাড়ির থেকে অনেক দূরে ওভাবে একা দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকে সেই ছেলে।
পরে কাঁদতে থাকে ওই ছোট্ট ছেলে। ওই রাতে বালকের আর্ত কান্নায় আশপাশ থেকে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাকে উদ্ধার করে কান্না থামানোর চেষ্টা হিয়। কিন্তু ভয়ে, আতঙ্কে তখন দিশেহারা ওই বালক। কিছুতেই তাকে শান্ত করা যাচ্ছে না। শেষপর্যন্ত খবর দেওয়া হয় বসিরহাট থানায়। খেতে দেওয়া হয় ওই বালককে। ধীরে ধীরে কান্না থাকে। আসল ঘটনা জানা যায়। বাড়ির ঠিকানাও জানায় সে। ইতিমধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পুলিশ তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আশ্বস্থ করে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। ওই বালকের বাবা-মায়ের সঙ্গেও পুলিশ যোগাযোগ করেছে বলে খবর। বাবা-মায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বসিরহাট সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।