বিক্রম রায়, কোচবিহার: প্রাক্তন ছিটমহলে এসআইআর সমস্যার সমাধানে এবার আসরে নামলেন খোদ মন্ত্রী। ছিটমহলের বাসিন্দাদের এনুমারেশন ফর্ম নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তাঁর দাবি, ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য বিজেপি চেষ্টা করছে। তাই সকলের ফর্ম নেওয়া উচিত।
বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। ছিটমহল বাসিন্দাদের এসআইআর এনুমারেশন ফর্ম নিতে হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বুধবার পোয়াতুর কুঠিতে গিয়ে প্রাক্তন ছিটমহল বাসিন্দাদের এসআইআর এনুমারেশন ফর্ম নেওয়ার জন্য সরাসরি অনুরোধ জানান। ছিটমহলের বাসিন্দাদের দাবির কথা মাথায় রেখেই এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) এই এলাকায় এলেও স্থানীয় বাসিন্দারা এসআইআর-এর জন্য এনুমারেশন ফর্ম নেননি। তাদের মূল আপত্তি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাদের নাম নেই, কারণ তারা ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে পরে ভারতীয় নাগরিক হয়েছেন। তাদের দাবি, নির্বাচন কমিশন প্রথমে ছিটমহল বাসিন্দাদের জন্য একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করুক। এরপরই তাঁরা এনুমারেশন ফর্ম নেবেন।
এই অচলাবস্থা কাটাতে মন্ত্রী উদয়ন গুহ ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি নিজে কথা বলেন এই এলাকার বাসিন্দাদের এসআইআর ফর্ম নেওয়ার জন্য রাজি করান। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রীর অভিযোগ, “বিজেপি চাইছে আপনাদের নাম বাদ দিতে, তাই ফর্ম না নিয়ে ভুল করবেন না।” তিনি স্থানীয়দের আশ্বাস দেন বিএলও এসে তাঁদের ফর্ম দেবেন এবং সঠিকভাবে ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়ের পর এখানকার বাসিন্দারা ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেও ভোটার তালিকা ও অন্যান্য সরকারি সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বহু প্রশাসনিক জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রসঙ্গত, বছরের পর বছর নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত থাকা ছিটমহলের বাসিন্দাদের সমস্যার সমাধান করতে বিনিময় করা হয় ছিটমহল। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ভারত ও বাংলাদেশের মাঝে ছিটমহল বিনিময় হয়। ভারতের দিকে থাকা ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশকে দেওয়া হয় এবং ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল। যাঁরা ভারতে যুক্ত হয়েছিলেন, তাঁরাই এখন এসআইআর আতঙ্কে ভুগছেন।