• নাম কাটা যাবে না তো! SIR শঙ্কায় কমিশনে যাচ্ছেন সোনাগাছির যৌনকর্মীরা
    প্রতিদিন | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিরুফা খাতুন: এসআইআর প্রক্রিয়ায় আতঙ্ক, দুশিন্তার কালো মেঘ জমছে সোনাগাছির লিপিকার (নাম পরিবর্তিত) মতো যৌনকর্মীদের মনে। পেটের টানে কাজের খোঁজে ঘর ছেড়েছিলেন ক‌্যানিংয়ের প্রত‌্যন্ত এলাকার মেয়ে সদ্য যৌবনে পা রাখা লিপিকা। অনিশ্চিত জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে শেষ পর্যন্ত ঠিকানা হয় সোনাগাছি। তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরা হয়নি। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে ৪০টা বছর। লিপিকার মতো এখানকার অনেক যৌনকর্মীর জন্মভিটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বহু কাল আগে। এসআইআরে নাম তোলার কোনও নথিপত্র তাঁদের নেই। লিপিকাদের ভবিষ‌্যত কী হবে? দীর্ঘ লড়াইয়ের পর যে ভোটাধিকার পেয়েছিলেন, এসআইআরের চক্করে তা কি হারিয়ে যাবে? এইসব প্রশ্ন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দারস্থ হচ্ছেন সোনাগাছির যৌনকর্মীরা, যাঁদের সংখ্যাটা কয়েক হাজার। বিপন্ন বোধ করছেন তাঁদের ছেলেমেয়েরাও। 

    দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি বিশাখা লস্কর জানান, ”২০০২ থেকে সোনাগাছির যৌনকর্মীদের ভোটার কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন অব‌শ‌্য সবাই ভোট দিতে পারেননি। আবার এখানে ২০০২ সালের পরও অনেকে এসেছেন। তাঁদের ২০০২-এর ভোটার তালিকায় নাম নেই। অনেকেই পরিবার থেকে বহুকাল আগে বিচ্ছিন্ন । কেউ আবার খুবই অল্প বয়সে ঘর ছেড়ে ছিলেন। তাঁদের পক্ষে বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করা, তাঁদের বাবা-মারা কোন বুথে ভোট দিতেন, এসব জানা সম্ভব নয়।” তাঁরা কোথা থেকে নথিপত্র পাবেন? প্রশ্ন সভাপতির।

    শুধু তাই নয়, তাঁর কথায়, ”এত যৌনকর্মীদের ভবিষ‌্যত জড়িয়ে রয়েছে। তাঁদের অনেকের ছেলেমেয়েও এখানে জন্মেছে। সেজন‌্যই কমিশনে চিঠি পাঠাচ্ছি। কমিশনকে আমাদের সমস‌্যার কথা জানাব। এই যৌনপল্লিতে আট হাজারের মতো সদস‌্য। সকলেই এদেশের নাগরিকও নন। প্রতিবেশী নেপাল, বাংলাদেশের বহু মেয়ে-মহিলাও এই যৌনপল্লিতে রয়েছেন।” দুর্বার সভাপতি আরও জানান, সোনাগাছিতে থাকা এদেশের নাগরিকদের একজনেরও নাম যাতে ভোটার তালিকা থেকে কাটা না পড়ে, তা সুনিশ্চিত করতে হবে কমিশনকে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)