নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সিবিআই এবং ইডি দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির টার্গেট। বিরোধীদের অন্যতম প্রধান অভিযোগ হল, কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বিগত ১১ বছরে যত মামলার তদন্ত করছে কিংবা অভিযান চালিয়েছে, তার সিংহভাগই বিরোধীদের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক কারণেই এখন দেশের দুই প্রধান তদন্তকারী এজেন্সিকে ব্যবহার করা হয়। আর সেই কারণেই এই দুই এজেন্সি সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় নিমজ্জিত। দুই এজেন্সির কাছে যত পরিমাণ মামলা রয়েছে, তার মধ্যে সিংহভাগই দিশা হারিয়েছে। চার্জশিট হয়নি। বিচারপ্রক্রিয়া হয়নি। প্রমাণ দাখিল করা যায়নি। সাজার সংখ্যা নগণ্য। এমনকি সুপ্রিম কোর্ট একাধিকবার এই দুই এজেন্সিকে তিরস্কার করেছে অতি সক্রিয়তার কারণে। এই ব্যর্থতার জেরেই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। সিবিআইয়ের হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাকে বদলে ফেলার সুপারিশ করেছিল সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। চলতি বছরের মার্চ মাসে সংসদে সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। সেই সুপারিশ পর্যালোচনা করে এখন সরকারের অন্দরে সিবিআই সংস্থার কার্যপ্রণালী বদলে ফেলার ভাবনা শুরু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। সিবিআইয়ের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক একটি আইন আনা হবে। সিবিআই অ্যাক্ট হিসেবে যা পরিগণিত হবে। সিবিআইয়ের উপর মাত্রাতিরিক্ত মামলার বোঝা। অথচ সেই তুলনায় তদন্তকারীর সংখ্যা নগণ্য। অন্য সিকিওরিটি এজেন্সি থেকেই সিবিআইয়ে আনা হয় কর্মী-অফিসার। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছে, সিবিআইয়ে নিয়োগের জন্য সরাসরি স্টাফ সিলেকশন কমিশন এবং ইউপিএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্তি হোক। কোনও বিরোধী দলের এমপি নয়। এই স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি এমপি ব্রিজ লাল। তাই আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ এই রিপোর্ট। এই সুপারিশের পর্যালোচনার পর আলোচনা শুরু হয়েছে, নতুন সিবিআই আইন চালু করা হতে পারে। সরাসরি পৃথক সিবিআই সার্ভিসও শুরু করার কথা ভাবা হচ্ছে। যাতে রাজ্য পুলিশ থেকে ডেপুটেশনে সিবিআইয়ে নিয়ে আসার অপেক্ষা করতে না হয়। পাশাপাশি ফরেন্সিক, সাইবার ক্রাইম, আর্থিক প্রতারণা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের বেসরকারি বিভাগ থেকেও নিয়ে আসার কথা ভাবা হয়েছে। যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় করা হচ্ছে। আসলে সরকার চাইছে সিবিআইয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে। কারণ সরকার বুঝতে পারছে বিগত ১১ বছরে গুরুত্ব হারিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। -ফাইল চিত্র