• চা বাগানের প্রচুর মানুষ পেটের দায়ে ভিনরাজ্যে, হেল্পডেস্ক খুলবে তৃণমূল
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: মঙ্গলবার থেকে এসআইআরের কাজ শুরু হয়েছে। ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই কাজ চলবে। আলিপুরদুয়ার জেলার বন্ধ ও চালু চা বাগানগুলির প্রচুর মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করছেন। বিএলওরা কীভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যপঞ্জি জোগাড় করবেন, তা নিয়েই বাগানগুলিতে চর্চা চলছে। এজন্য বাইরে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ির সদস্যদের সাহায্য করতে সোমবার থেকে চা বাগানগুলিতে হেল্প ডেস্ক খুলতে যাচ্ছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বিজেপি সহ বিরোধী অন্য দলগুলির বাগানে হেল্প ডেস্ক খোলার ভাবনা নেই। 

    জেলায় ৬৪টি বাগান। এরমধ্যে তিনটি বাগান বন্ধ। এই মুহূর্তে ৬৪টি বাগান মিলিয়ে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ মানুষ দেশের বিভিন্ন রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে নির্মাণ কাজে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের হিসেব বলছে, তারমধ্যে ২০-২৩ শতাংশ পরিযায়ী শ্রমিকের ভোট আছে। রোজগারের আশায় চা বলয়ের ওই শ্রমিকদের সিংহভাগই ভোট দিতে আসেন না। কেউ কেউ অবশ্য ভোট দিতে আসেন। এসআইআরের কাজে বিএলওরা কীভাবে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যপঞ্জি সংগ্রহ করবেন তা নিয়েই  চা মহল্লায় সংশয় তৈরি হয়েছে। 

    কেরলে থাকেন জেলার একটি চা বাগানের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিক রামেল ওরাওঁ। টেলিফোনে তিনি বলেন, বাগানে কাজ করলে দৈনিক মজুরি মেলে ২৫০ টাকা। এখানে কাজ করে মজুরি মিলছে ৮০০ টাকা। তাই ভোটের খাতায় নাম উঠল কি উঠল না, তা নিয়ে ভাবি না। টাকা খরচ করে এসআইআরের ফর্ম ফিলআপ করতে বাড়ি যেতে রাজি নই। 

    জেলার আরএকটি বাগানের বাসিন্দা গুজরাতে থাকেন। তিনি ফোনে বলেন, ভোট আমাদের পেট ভরায় না। কেন বেকার টাকা খরচ করে এসআইআরের জন্য বাড়ি যাব। ওসব বাড়ির লোক দেখে নেবে। 

    যদিও প্রশাসন বলছে, অনলাইনেও এসআইআরের ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা আছে। বাড়ির কোনও সদস্য পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যপঞ্জি দিলে বিএলওরাই অনলাইনে ফরম ফিলআপ করে দেবেন। তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, এই সংশয়ের জন্যই আগামী সোমবার থেকে আমরা জেলার প্রতিটি বাগানে হেল্প ডেস্ক চালু করছি। আমাদের বাগানের ইউনিট কমিটি শ্রমিকদের এই কাজে সাহায্য করবে। 

    যদিও এমপি তথা বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠন বিটিডব্লুইউয়ের চেয়ারম্যান মনোজ টিগ্গা বলেন, আমরা এসআইআরের জন্য বাগানে হেল্প ডেস্ক খোলার প্রয়োজন মনে করছি না। কারণ বিএলওরা তো আছেনই। সঙ্গে দলের বিএলএ-২ থাকছেন। তাঁরাই এ বিষয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ির সদস্যদের সাহায্য করবেন।

    যদিও জেলাশাসক আর বিমলা জানিয়েছেন, এসআইআরের ফর্ম পূরণের অফলাইন ও অনলাইন দুই ধরনের ব্যবস্থাই আছে। ফলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফর্ম পূরণ করা যাবে। হাতে অনেক সময় আছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)