কোটি টাকা খরচ হয়ে গেলেও করলার উপর সেতু অসম্পূর্ণ, অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য ফের বরাদ্দের আবেদন
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: করলা নদীর উপর সেতু তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয় বাম আমলে। সেইমতো বরাদ্দ হয় কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু বরাদ্দ অর্থ খরচ হয়ে গেলেও অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে জলপাইগুড়ি শহরের সমাজপাড়ায় ওই সেতু। প্রায় ১৫ বছর ধরে সেতুটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবে শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে ওই সেতু চালু করা যায় কি না, তা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাবনাচিন্তা।
সেতুটির অ্যাপ্রোচ রোড তৈরিতে এসজেডিএ’র পক্ষ থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। সেতুর অডিট রিপোর্টের সূত্র ধরে বুধবার সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করলেন বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। সেতুটির বর্তমান পরিস্থিতি কী, সেটি আদৌও চালু করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে এদিন জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে বৈঠকও করেন তিনি। ছিলেন এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান দিলীপ দুগার, জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল, ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় সহ রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকরা।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের অডিট রিপোর্ট সামনে রেখেও এদিন বৈঠক করেন সুমন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের আধিকারিকরা। সাম্প্রতিক বন্যায় গোরুমারা, জলদাপাড়া, বক্সা সহ উত্তরের বনাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও এদিন ডিএফওদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান।
সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, ২০০৯-’১০ সালে জলপাইগুড়ি শহরে করলা নদীর উপর একটি সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। এস্টিমেট ছিল ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। ২০১৩ সালে কাজ শেষের পর দেখা যায়, সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি হয়নি। বলা হয়, অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি না হওয়ায় সেতুটি অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই থেকে যায়। এরপর ২০১৭-’১৮ সালে ফের সেতুটি সম্পূর্ণ করতে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির জন্য টাকা চাওয়া হয়। দীর্ঘদিন অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকায় আদৌও সেটি কোন পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা জানতে সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট জানা জরুরি হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির কাছে অডিট রিপোর্ট আসে। এছাড়াও এসজেডিএ জানিয়ে দেয় সেতুটি চলাচলের উপযুক্ত নয়।
সুমনের দাবি, জলপাইগুড়ির ওই সেতু নিয়ে ২০২৩ সালে এসজেডিএ’র পক্ষ থেকে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের কাছে অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর আবেদন জানানো হয়েছে। এদিন ওই অসম্পূর্ণ সেতু পরিদর্শন করেছি। পুরসভা ও এসজেডিএ বৈঠকে জানিয়েছে, অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির জন্য জায়গার সমস্যা হবে না। যাঁরা সরতে চাইছিলেন না, তাঁদের বাংলার বাড়ি তৈরি করে পুনর্বাসন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে সুমন বলেন, আশির দশকে ওই প্রকল্পে জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু সবটা ঠিকভাবে হয়নি। এনিয়ে অডিট রিপোর্ট রয়েছে। বর্তমানে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের অধীনে কৃষিসেচের কাজ করার চেষ্টা চলছে। এতে কৃষকের জমির নীচে দিয়ে পাইপ গেলেও চাষাবাদে ক্ষতি হবে না। নিজস্ব চিত্র।