• শিলিগুড়িতে মহানন্দা সহ ৪ নদী ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ, সেচদপ্তরের সঙ্গে সমীক্ষা পুরসভার
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। শিলিগুড়ির ‘লাইফ লাইন’ মহানন্দা নদী বাঁচাতে উদ্যোগী পুরসভা। বুধবার তারা এ ব্যাপারে সেচদপ্তরের সঙ্গে যৌথ সমীক্ষা চালায়। একইসঙ্গে মহানন্দার আরও তিনটি উপ নদীরও নাব্যতা বাড়নো হবে। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পুরসভার এমন তৎপরতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে শহরে চারটি নদীর প্রায় সাড়ে ২০ কিমি এলাকা সংস্কার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে নদীর ‘স্যাটেলাইট পিকচার’ ধরে সমীক্ষা চালাবে সেচদপ্তর। 

    শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, একদা শহরে জোড়াপানি ও ফুলেশ্বরী নদী দু’টি নালায় পরিণত হয়েছিল। ইতিমধ্যে সেচদপ্তরের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট দুই নদীই সংস্কার করা হয়েছে। এবার মহানন্দা সহ চারটি নদী ড্রেজিং করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তা঩বিত প্রকল্পটি পাঠানো হবে। এজন্যই এদিন নদী পাড়ে যৌথ সমীক্ষা চালানো হয়। 

    শিলিগুড়ি শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট-বড় নদীগুলির মধ্যে মহানন্দা অন্যতম। পাহাড়ি এই নদী সংস্কারের দাবি বহুদিনের। অভিযোগ, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় নদীর একাংশ মজে গিয়েছে। বালি, পাথর জমে নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। কিছু জায়গায় চর দখল করে গড়ে উঠেছে বসতি। এবার চর কেটে মহানন্দা নাব্যতা বাড়াতে তৎপর পুরসভা। এজন্য এদিন মেয়রের নেতৃত্বে পুরসভা ও সেচদপ্তর যৌথভাবে বাঘাযতীন কলোনি, গুরুংবস্তি এলাকা পরিদর্শন করেছে। মেয়র ছাড়াও টিমে সেচদপ্তরের শিলিগুড়ি ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল মণ্ডল, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার সহ পুরসভার কাউন্সিলার ও আধিকারিকরা ছিলেন। 

    সেচদপ্তর সূত্রে খবর, এখানে মহানন্দা নদী সাব বেসিন। শহরের বিভিন্ন নালা, পঞ্চনই, চামটা, বালাসন সহ ২৬টির মতো নদী মহানন্দায় মিশেছে। চর জেগে ওঠায় এই সাব বেসিনের একাংশ অচল হয়ে পড়েছে। এতে নদী ভাঙন ও প্লাবনের শঙ্কা বাড়ছে। তাই প্রধাননগর, গুলমা, বাঘাযতীন কলোনি সহ পাঁচটি জায়গা থেকে মহানন্দা নদীর চর কাটার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যা প্রায় ১০ কিমি লম্বা। সেইসঙ্গে পঞ্চনই নদীর সাড়ে ৬, চামটা ও বুড়ি বালাসনে ২ কিমি করে অংশ  সংস্কারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

    সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদীগুলি প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে। সেগুলিতে জল ধারণ ক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমন ভাঙন ও প্লাবনের আশঙ্কাও কমবে। মেয়র জানান, শুখা মরশুমেই প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজে হাত দেওয়ার চেষ্টা চলছে। 

    প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মহানন্দা, বালাসন সহ প্রতিটি নদীতেই মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। নদীর পাড়, বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি, নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় উঁচু হয়েছে নদীর বক্ষ। এজন্য শীঘ্রই ড্রোন উড়িয়ে এবং উপগ্রহ ছবির মাধ্যমে নদীগুলির গতিপথের তথ্য সংগ্রহ করবে সেচদপ্তর।
  • Link to this news (বর্তমান)