সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি: রিচার ঘরে ফেরার অপেক্ষায় শিলিগুড়ি। সারা শহর অধীর প্রতীক্ষায় রয়েছে কতক্ষণে সোনার মেয়েকে কাছে থেকে দেখবেন, অভিনন্দন জানাবেন। মা স্বপ্না ঘোষ অপেক্ষায় রয়েছেন মেয়ের প্রিয় খাবারে তাকে বরণ করার জন্য।
বিশ্বকাপ জয়ের পর রিচা শিলিগুড়ি তথা বাংলার রাজরানি। কিন্তু অনেকেই জানেন না, ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হওয়ার পরও একদিন তাঁকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করতে দেওয়া হয়নি। করোনাকালে বাড়িতে ছুটিতে এসেছিলেন রিচা। ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ের জন্য সকালে বাবার সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন। কিন্তু শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের এক প্রাক্তন ও এক বর্তমান কর্তার কারসাজিতে সেদিন কার্যত অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল রিচা ও তাঁর বাবা মানবেন্দ্র ঘোষকে। এক চা দোকানিকে দিয়ে রিচার মুখের উপর স্টেডিয়ামের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
সেই ঘটনা মনে রয়েছে মানবেন্দ্রবাবুর। বুধবার নিজের বাড়িতে একান্তে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে এরকম অনেক ঘটনার কথাই উঠে আসে। তিনি বলেন, বড় সাফল্য পেতে গেলে আশীর্বাদের মতো ‘অভিশাপ’-এরও প্রয়োজন। অপমান, ঘাত-প্রতিঘাত না এলে জেদ, প্রত্যয় তৈরি হয় না। বিচার ক্ষেত্রেও এরকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে। আমার মনে হয় সেগুলি রিচাকে আজকের এই জায়গায় পৌঁছনোর জন্য জেদি করে তুলেছিল। তবে আনন্দের দিনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলব না।
এদিকে, দিল্লিতে নতুন করে অনুষ্ঠান যুক্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে কাল, শুক্রবার শিলিগুড়িতে আসছেন রিচা। সোনার মেয়ের আগমনকে ঘিরে সুভাষপল্লিতে তাঁর বাড়ি সেজে উঠছে আলোর মালায়, দেওয়া হয়েছে বিশাল হোর্ডিং। এদিনও মা স্বপ্নাদেবী মেয়ের কৃতিত্বে অনুভূতি জানাতে গিয়ে আনন্দাশ্রুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর সামলে নিয়ে বলেন, এই আনন্দ বোঝানোর ভাষা নেই। শুক্রবার রিচাকে ওর প্রিয় খাবার ফ্রায়েডরাইস ও চিলি চিকেন দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। শুভ কামনার জন্য পায়েসও করব।
এদিকে, রিচার বাড়িতে আসার দিন পিছিয়ে যাওয়া এবং ৮ নভেম্বর কলকাতায় সিএবি’র সংবর্ধনা পড়ে যাওয়ায় শিলিগুড়ি পুরসভা রিচাকে সংবর্ধনার দিন চূড়ান্ত করতে পারছে না। মেয়র গৌতম দেব বলেন, রিচার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি আমরা। যদি সিএবি’র সংবর্ধনা নিয়ে রিচা শিলিগুড়িতে ফিরে আসেন, তাহলে ৯ নভেম্বর আমরা ওঁকে দীনবন্ধু মঞ্চে নাগরিক সংবর্ধনা দেব। নিজস্ব চিত্র।