• এসআইআর আতঙ্ক! আরও ২ মৃত্যু ভাঙড় ও মুর্শিদাবাদে
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং সংবাদদাতা, লালবাগ: ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনীকে (এসআইআর) কেন্দ্র করে বুধবার সকালে দক্ষিণবঙ্গের দুই প্রান্ত ভাঙড় এবং মুর্শিদাবাদ থেকে দুটি মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। দুটি ক্ষেত্রেই পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, এসআইআর আতঙ্ক গ্রাস করছিল তাঁদের প্রিয়জনকে। এমনকী ভিটেমাটি ছাড়ার আশঙ্কা লালন করে ক্রমেই হতাশগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন তাঁরা। তারই জেরে ভাঙড়ের জয়পুরের ফুচকা বিক্রেতা শফিউল গাজি (৩৫) নামে এক যুবক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারির অস্থায়ী মালি পদে কর্মরত প্রৌঢ় জিতেন রায়ের (৫০) মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তবে শফিউলের ক্ষেত্রে পাড়া-পড়শিদের দাবি, মিনাখাঁর বাসিন্দা শফিউল জয়পুরে ঘরজামা‌ই হয়ে থাকছিল। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-ঝামেলা লেগেই থাকত। তার জেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ বিষয়টিকে খতিয়ে দেখছে। শফিউলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে যান ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা। তাঁর কথায়, শফিকুল ঘরজামাই। তাঁর কোনও কাগজপত্র ছিল না। দু’তিনদিন ধরে হতাশা আর আতঙ্ক গ্রাস করছিল। তার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শফিউলের বাবার নাম রয়েছে ২০০২’এর ভোটার তালিকায়। কিন্তু তাঁর নিজের কোনও নথিপত্র ছিল না। 

    অপরদিকে, মুর্শিদাবাদ স্টেশন রোডের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা প্রৌঢ় জিতেনবাবু প্রায় ৫০ বছর আগে বাবার হাত ধরে বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে নবাবনগরী মুর্শিদাবাদে এসেছিলেন। এখানেই বসতি গড়ে তোলেন।  ২০০২’এর ভোটার তালিকাতেও তাঁর নাম ছিল। কিন্তু তাঁর মাথায় ঢুকেছিল, জন্ম শংসাপত্র ও জমির কোনও দলিল না থাকলে, এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। এই আতঙ্কের কথাই বারবার গত কয়েকদিন ধরে পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রকাশ করছিলেন। এ খবর জেনে সোমবারই জিতেনবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলার বিশ্বজিৎ দে। অকারণে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে এসেছিলেন তিনি। জিতেনবাবুর ছেলে জয়দেব চেন্নাইতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। অসুস্থ বাবার এই অহেতুক আতঙ্কের কথা শুনে তিনি মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন। বুধবার বাড়ি পৌঁছে বাবাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছেন তিনি। জয়দেব বলেন, তিনদিন আগে ফোন করে বাবা এসআইআর নিয়ে তাঁর আতঙ্কের কথা শুনিয়েছিলেন। ওসব নিয়ে চিন্তা করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু আমি আসার আগেই সব শেষ।  
  • Link to this news (বর্তমান)