এসআইআর চালু হতেই পানাপুকুরে উদ্ধার বিপুল সংখ্যক আধার, তোলপাড় পূর্বস্থলী
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: বাংলায় সবে শুরু হয়েছে এসআইআর। তারমধ্যেই বুধবার সকালে পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর গ্রামের একটি পানাপুকুর থেকে উদ্ধার হল প্রচুর আধার কার্ড। বহু কার্ডে ঠিকানা হিসেবে স্থানীয় এলাকার নাম রয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। কিন্তু, এত বিপুল সংখ্যক আধার কার্ড পানাপুকুরে এল কীভাবে? কারাই বা ফেলে গেল? তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, আধার কার্ডের নাম ঠিকানা ধরে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হবে। কালনার এসডিপিও সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া আধারকার্ড নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। কারা এখানে আধার কার্ড ফেলল, তা নিয়ে খোঁজ চলছে।’
শ্রীরামপুর গ্রামটি পূর্বস্থলী-২ ব্লকের পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের পিলা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। সেখানকার ললিতা বিলের পাশেই রয়ে ওই পানাপুকুরটি। এদিন, সকালে পানা পরিষ্কার করতে গিয়ে আধারগুলি উদ্ধার হয়। খবর যায় থানায়। পুলিশ এসে ১৭২টি আধার কার্ড উদ্ধার করে নিয়ে যায়। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কম করে তিন বস্তা আধার কার্ড ছিল। ঘটনাটি জানাজানি হতেই তৃণমূলের বিধায়ক ও বিজেপির নেতারা হাজির হন। শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের রাজনৈতিক তরজা।
জানা গিয়েছে, পানাপুকুরে আধার কার্ডগুলি পড়ে থাকতে প্রথম দেখেন স্থানীয় বাসিন্দা বাবু দাস ও বাসুদেব ঘোষ। তাঁরা দেবব্রত মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে ডেকে আনেন। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘আধার কার্ডগুলিতে পূর্বস্থলীর হামিদপুর, দফাদার পাড়া, কাটোয়ার গড়াগাছা এলাকার নাম ছিল। আমাদের মনে হচ্ছে, অনেকের কাছে সম্ভবত জাল আধার কার্ড ছিল। এসআইআর শুরু হতেই কেউ বা কারা এখানে ফেলে গিয়েছে। আবার এর পিছনে জাল আধার কার্ড তৈরির চক্রও জড়িয়ে থাকতে পারে। কার্ডগুলিতে আমির হোসেন শেখ, জাকির শেখ, ফতেমা বিবি, তানিয়া মল্লিক এমন সব নাম ছিল।’
বিজেপি নেতা পরিমল মিস্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেছি, তিন বস্তার মতো আধার কার্ড ছিল। দু’টি বস্তা জলে ছিল। একটি বস্তা থেকে কিছু আধার কার্ড পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে। ঘটনাটির উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হোক।’ তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘এইসব আধার কার্ডগুলি নকল। প্রয়োজন নেই বলে কেউ হয়তো এখানে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। বিজেপি এখন এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছে’
ক’মাস আগেই পূর্বস্থলী-২ ব্লকে একজনের খোঁজ মিলেছিল। যিনি বাংলাদেশের শিক্ষক। অথচ, এদেশে তাঁর স্ত্রী রয়েছেন। দু’দেশের ভোটার তালিকায় ওই বাংলাদেশি শিক্ষকের নাম রয়েছে। সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এদেশে এসে বসবাস করছেন তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় তুলে দিয়েছেন স্বজনরা। সে সময় খোদ তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, একটি চক্র রয়েছে। যারা মোটা টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে৷ তারাই জাল আধারকার্ড তৈরি করছে। বিধায়কের সরব হওয়ার পরও জাল আধারচক্রের হদিশ পায়নি পুলিশ। তার পরেই শ্রীরামপুরের এই ঘটনা।