• প্রাক্তন কাউন্সিলার আর্থিক প্রতারণা কাণ্ডে ৯৫ অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ পুলিশের
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দশ দিনের পুলিশি হেপাজত কাটিয়ে বুধবার আসানসোলর পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার সাকিল আহমেদের ছেলে তাহসিন আহমেদকে আসানসোল আদালতে তোল হয়। কয়েক’শো কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণা কাণ্ডের একেবারে শিকড়ে পৌঁছতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করেছে। মামলাটিতে পুলিশ যুক্ত করেছে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটারস ইন ফিনান্সিয়াল এস্টাব্লিসমেন্ট’ অ্যাক্টের ধারা। ফলত, মামলাটির তদন্তকারী অফিসার হয়েছেন ডিএসপি পদ মর্যাদার অফিসার। শুধু তাই নয়, প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মামলাটির তদন্তভার নিতে চলেছে ডিরেক্টর অফ ইকনমিক অফেন্স বিভাগ।  টানা দশদিনের তদন্তে পুলিশের হাতে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, পুলিশ তদন্তে নেমে হদিশ পেয়েছে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন। অভিযুক্তর বাড়ি থেকে ৯৩টি এগ্রিমেন্ট পেপার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেনের হিসেব রয়েছে। এরপরই পুলিশ অভিযুক্তর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে বৃহৎ লেনদেন হওয়া অ্যাকাউন্ট গুলির খোঁজ করে। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ৯৫টি অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করে। সেখানে বৃহৎ লেনদেন হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলি পুলিশ আপতত ফ্রিজ করেছে। যাতে ওইসব অ্যাকাউন্টগুলিতে আর কোনও লেনদেন করা না যায়।  যাঁদের অ্যাকাউন্ট পুলিশ বন্ধ করেছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। কেউ বড় ব্য‌বসায়ী, কেউ রাজনৈতিক নেতা। ১২ শতাংশ, ১৫ শতাংশ সুদের লোভে তারাও তাহসিনের কাছে টাকা ঢেলে ছিল। আবার তাহসিনের অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁদের অ্যাকাউন্টেও টাকা গিয়েছে। আসানসোলের এসিপি বিশ্বজিৎ নস্কর মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসবে কাজ শুরু করেছেন। তাহসিনের পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি যাঁদের সঙ্গে তার আর্থিক লেনদেন হয়েছে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।  বুধবার আসানসোল সিজেএম এজলাসে মামলাটি ওঠে। অভিযুক্তের আইনজীবী সৈয়দ রা‌ইহাম জামিনের আবেদন করেন। অন্যদিকে, পুলিশ মামলার অগ্রগতি দেখিয়ে জেল হেপাজতের আর্জি জানায়। বিচারক অভিযুক্তকে একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার আসানসোল এডিজে’র এজলাসে মামলাটি উঠবে। অভিযুক্তের আইনজীবী সৈয়দ রাইহাম বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে মাত্র একজন অভিযুক্ত লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ তাঁর সঙ্গে আমার মক্কেলের লেনদেন দেখতেই পারেন। বাকিদের পুলিশ কেন হয়রান করছে? দু’জন ব্যক্তি নিজেদের ম঩ধ্যে আর্থিক লেনদেন কিংবা আর্থিক চুক্তি থাকতেই পারে। তাঁদের মধ্যে কেউ অভিযোগ না করলে তা কী করে আর্থিক প্রতারণা হয়? পুলিশ বেআইনিভাবে ৯৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। 

    কয়েকদিন ধরেই আসানসোল রেলপাড়ের প্রাক্তন কাউন্সিলার সাকিল আহমেদের বাড়ি ঘেরাও করে রাখছিলেন পাওনাদাররা। অভিযোগ ছিল, চড়া সুদে টাকা ফের‌ত দেওয়ার নাম করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল তাহসিন আহমেদ। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, শেয়ার মার্কেটে টাকা খাটিয়ে বিপুল মুনাফা করতে গিয়েই বিপর্যয় হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)