• বিএলওদের সঙ্গে দলের এজেন্টদের থাকতেই হবে, কর্মীদের কড়া নির্দেশ বাঁকুড়া তৃণমূল নেতৃত্বের
    বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআরে নজর রাখতে তৎপর হল বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতৃত্ব। বর্তমানে শাসক দলের বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে দু’টি পৃথক সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। উভয় সাংগঠনিক জেলাতেই এব্যাপারে বুথ লেভেল এজেন্টদের ঘাসফুল শিবিরের নেতা-নেত্রীরা কড়া নির্দেশ দিয়েছে। এসআইআরের প্রথম দু’দিনে জেলার বহু বুথে ‘বিএলও’দের সঙ্গে ‘বিএলএ-টু’রা ছিলেন না। বিরোধীদের পাশাপাশি এব্যাপারে শাসক দলের এজেন্টদেরও ময়দানে দেখা মেলেনি। বিষয়টি জেলা নেতৃত্ব ভালোভাবে নেয়নি। 

    বুধবার বাঁকুড়া শহরের ওয়ার রুমে বসে এসআইআর প্রক্রিয়ার ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছিলেন তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার। তিনি বলেন, বুথ লেভেল অফিসারদের সঙ্গে ‘বিএলএ-টু’দের থাকতেই হবে। এর অন্যথা হলে চলবে না। এব্যাপারে আমরা দলের এজেন্টদের নির্দেশ দিয়েছি। বাঁকুড়া শহরের ওয়ার্ডে ১০-১২ জন ‘বিএলএ-টু’ পিছু একজন করে সুপারভাইজার থাকছেন। তিনি দলের তরফে বুথ লেভেল এজেন্টদের কাজের উপর নজরদারি চালাচ্ছেন। একাধিক বুথের এজেন্টদের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখার কাজও তিনি করছেন। কারও কোনও সমস্যা হলে তিনি আমাদের জানাচ্ছেন। আমরা সেইমতো ব্যবস্থা নিচ্ছি। 

    বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলাতেও বুথ লেভেল এজেন্টদের আমরা বার্তা পাঠিয়েছি। কোনওভাবেই ‘বিএলও’দের একা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। নিরপেক্ষভাবে কাজ হচ্ছে কি না, তা দলের এজেন্টদের দেখে নিতে হবে। বৈধ ভোটারদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তারজন্য আমরা বাংলার ভোট রক্ষা শিবির চালু করেছি। এদিন আমি বড়জোড়া ও হাটআশুড়িয়া অঞ্চলে শিবির পরিদর্শন করেছি।

    উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাঁকুড়ার একাধিক ব্লকে তৃণমূলের সভাপতি পরিবর্তন হয়েছে। ব্লক ও অঞ্চল সভাপতিদের সঙ্গে বুথ সভাপতিদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ফলে বুথের নেতাদের না জানিয়েই অনেক জায়গায় বিএলএ নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাঁকুড়া-২ ব্লকের বিকনা অঞ্চলে তাঁকে না জানিয়ে বিএলএ নিয়োগের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি। পাল্টা বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে বিএলএকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন অঞ্চল সভাপতি। ওই দুই তৃণমূল নেতার টানাপোড়েনে বিকনা গড়াই পাড়ায় শাসক দলের বিএলএ প্রথম দিনের এসআইআরে ছিলেন না। জেলার অন্যান্য ব্লকেও একাধিক বুথে ওই চিত্র চোখে পড়েছে। বিরোধীদের হালও অবশ্য তথৈবচ। বিরোধী বিএলএ-দের বহু বুথে পাত্তা পাওয়া যায়নি। 

    রানিবাঁধে মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডির সঙ্গে বুথ লেভেল অফিসারের দরজায় দরজায় ফর্ম বিলি নিয়ে বিতর্ক মাথাচার দেওয়ায় বিএলওদের প্রশাসন সতর্ক করে দিয়েছে। বিডিও-রা নিজ নিজ ব্লকের বিএলওদের মৌখিকভাবে রাজনৈতিক সংস্রব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। বিএলএ নন এমন কোনও রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে নিয়ে ভোটারদের কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএলও বলেন, আমরা কাজে বের হওয়ার সময় কাউকে ডাকি না। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের এড়িয়ে চলা অনেকসময় মুশকিল হয়। তাঁরা চলে এলে বারণ করতে পারা যায় না। এদিকে আবার প্রশাসনের তরফে চাপ রয়েছে। আমরা উভয়সঙ্কটে পড়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)