বজবজে জল জমে থাকা জমিতে হচ্ছে শাপলা, পানিফলের মতো বিকল্প চাষ
বর্তমান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বজবজ: বজবজ গ্রামীণ এলাকার অনেক নীচু চাষের জমিতে দীর্ঘ সময় জল জমে থাকার কারণে ধানচাষ সম্ভব হচ্ছিল না। সেই সব জমি থেকে রোজগার করার জন্য কৃষকরাই নিজ উদ্যোগে বিকল্প চাষে নেমেছেন। জল জমে থাকা ওইসব জায়গা থেকে আগাছা পরিষ্কার করে শাপলা, পানিফলের চাষ শুরু করেছেন। কৃষকদের কথায়, এখন প্রচুর মানুষ শাপলা এবং পানিফল পছন্দ করে। এতে খরচ কম। গ্রামীণ এলাকা ছাড়াও কলকাতা শহরে এই দু’টি জিনিসের বাজার আছে।
বজবজ ২ নম্বর ব্লকের সাউথ বাওয়ালি, বুঁইতার ঘনশ্যামবাটি, কৌনচৌকি, পার্বতী ইত্যাদি এলাকায় বহু বছর আগে বিঘের পর বিঘে জমিতে ধানচাষ হতো। এর উপর নির্ভরশীল ছিলেন এতদঞ্চলের কৃষকরা। কিন্তু ধীরে ধীরে নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, ওইসব অঞ্চলে বর্ষার জমা জল বেরতে পারে না। ফলে নীচু চাষের জমি দীর্ঘ সময় জলে ডুবে থাকে। শুধু তাই নয়, বর্ষার পরও সেখানে জল জমে থাকে। এজন্য ধানচাষ করা যায় না।
কৃষক মাধাই ধারা, জগদীশ ধারা, অমল ধারা, প্রশান্ত মণ্ডলরা বলেন, বহু বছর এই কারণে জমি ফেলে রাখতে হয়েছে। ফলে আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের পথ খুঁজছিলাম আমরা। তাতে পরিচিতরা বলেছিলেন, জলে শাপলা ও পানিফলের চাষ ভালো হয়। তাঁদের পরামর্শ মেনে শাপলা ও পানিফলের বীজ নিয়ে চাষ করি। তাতে ভালো ফল পেয়েছি। আর বেশি বর্ষা হলেও কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। পাশাপাশি অনেকে পুকুর আছে, যেখানে মালিকরা মাছচাষ ছাড়াও পদ্মফুলের চাষ শুরু করেছেন। ফলে এখন আর আগের মতো জল জমে থাকা জমি ও পুকুর ফেলে রাখতে হচ্ছে না। সারা বছর ধরে এই সব বিকল্প চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ এবং কৃষক, খেতমজুর সমিতির সভাপতি ডাঃ তরুণ রায় বলেন, নানা কারণে ওইসব এলাকার চারদিক উঁচু হয়ে যাওয়ায় বিঘের পর বিঘে নীচু চাষের জমিতে জল জমলে সরে না। ফলে চাষ করা যাচ্ছে না। যদিও রাজ্য সরকার খাল খনন করে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে এলাকার মানুষ সেই সব জল জমা চাষের জমিতে নিজেরাই বিকল্প পদ্মফুল, শাপলা এবং পানিফল চাষ শুরু করেছেন। এটা ভালো লক্ষণ। কৃষকরা বিষয়টি কৃষিবিভাগে জানালে এ ব্যাপারে আর্থিক এবং বিপণনগত সাহায্য পেতে পারেন।-নিজস্ব চিত্র