• 'হঠাত্ পাড়া'-য় হুলুস্থুল, একবার আসে বিজেপি তো পরেরবার তৃণমূল, SIR নিয়ে আতঙ্কে ৫০ পরিবার
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • চম্পক দত্ত: মেদিনীপুর শহরের "হঠাৎ পাড়া" কে ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনীতি। বিজেপি তৃণমূল দুজুধান দুপক্ষেরই লক্ষ্য এখন 'হঠাৎ পাড়া'। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শংকর গুচ্ছাইতের নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল হঠাৎ পাড়া তে এসে মানুষদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন যাদের ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম নেই তারা যেন ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য সিএএ তে আবেদন করেন।  ভারত সরকার শরণার্থীদের পাশে রয়েছে। খুব শীঘ্রই সিএএ একটি ক্যাম্প এই এলাকায় খোলা হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।

    বিজেপির পরই দেখা যায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরার নেতৃত্বে তৃণমূলের একটি দল গিয়ে পৌঁছান ওই হঠাৎ পাড়াতে। এখানে সুজয় এলাকা বাসীদেরকে আশ্বস্ত করেন তৃণমূল দল তাদের পাশে রয়েছে বলে। পাশাপাশি তিনি এলাকাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন,  কেউ বিজেপির পাতা ফাঁদে পড়ে সিএএ ফর্ম ফিলাপ করবেন না। বাংলাদেশি আখ্যা দেওয়া যে অপচেষ্টা বিজেপি করছে সেই পাতা ফাঁদে কেউ পা দেবেন না। শীঘ্রই এই ওয়ার্ডে হেল্প ডেক্স খোলা হবে। কোন সমস্যা হলে সেখানে গিয়ে সহযোগিতা নেবেন। 

    তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্যের পাল্টা হিসেবে বিজেপির জেলা সহ সভাপতি শংকর গুচ্ছাইত বলেন, যাদেরকে বলা হয়েছে সিএএ তে আবেদন করার দরকার নেই সেই সব মানুষ আপনাদের বাড়ি ঘেরাও করবে। বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুরিয়া হাজরা যেভাবে মানুষগুলোকে ঠকানোর জন্য এবং মানুষগুলোর জীবন শেষ করার জন্য সিএএতে আবেদনের কথা সরাসরি না বলে এসেছেন, তাই আমিও ওখানকার মানুষদেরকে বলবো যদি আপনাদের নাম বিধায়কের জন্য বাদ যায়, যদি আপনারা বিধায়কের কথায় সিএএতে আবেদন না করেন আর আপনার ভোটার লিস্টে নাম না আসে তাহলে বিধায়ককেই তার জবাবদিহি করতে হবে।

    এরপরে  ফের একবার দেখা গেল মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান ভাইস চেয়ারম্যান অনিমা সাহা সহ তৃণমূল কাউন্সিলরদেরকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন হঠাৎ পাড়াতে।প্রত্যেকটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা কথা বলেন মানুষের সাথে। সেখানে তিনি এলাকাবাসীদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন কোন বৈধ ভোটারের নাম কাটা যাবে না। এখানে যারা ভোটার রয়েছেন তাদের প্রত্যেকের কাছে ভোটার কার্ড আধার কার্ড জন্মের সার্টিফিকেট রয়েছে তাদেরকে আতঙ্কগ্রস্থ করে দেওয়ার জন্য কেউ বা কারা একটি বিভ্রান্ত প্রচার করেছেন। তাই আমরা মানুষকে বোঝাতে এসেছি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমাদের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছে কাউকে কোথাও যেতে হবে না কাউকে চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে না।

    উল্লেখ্য, এই হঠাৎ পাড়া তে রয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টি এমন বাড়ি যারা ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এসে মেদিনীপুর শহরে বসবাস করছে। কেউ কুড়ি বছর কেউবা তার থেকেও বেশি বছর ধরে এই জায়গায় বসবাস করছে। কিন্তু এইসব পরিবারের কারোরই ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম নেই। স্বাভাবিকভাবেই এসআইআর চালু হওয়ার পর তারা আতঙ্কে রয়েছে। দুই রাজনৈতিক দলের দুই রকম কথায় এলাকাবাসীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে রয়েছে।তবে এলাকাবাসীরা জানান তারা কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হয়েছেন তবে এখনো পুরো চিন্তামুক্ত  তারা হতে পারছেন না। আগামী দিনে হঠাৎ পাড়ার ভবিষ্যৎ কি হবে তা ভবিষ্যতই বলবে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)