রাজ্যে ফের জিবিএস সংক্রমণ, দুই জেলায় দুই আক্রান্তের হদিশ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
রাজ্যে ফের দেখা দিল জিবিএস (গিলেন–বারে সিন্ড্রোম)–এর সংক্রমণ। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি আলাদা জেলায় দু’জন রোগীর মধ্যে জিবিএস–এর উপসর্গ মিলেছে। দু’জনকেই স্থানীয় হাসপাতাল থেকে আপৎকালীন ভিত্তিতে বড় সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় এখনই আতঙ্কের কিছু নেই, তবে পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।
সম্প্রতি পার্ক সার্কাসের ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্থ’-এ দুই বালক গিলেন–বারে সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে একজন বোলপুরের বছর দশেকের বালক এবং শিবপুরের বাসিন্দা এগারো বছরের আরও একজন বালক।
স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা জানান, ‘প্রথম রোগীর হাত–পা অবশ হয়ে আসছিল এবং পেশির টান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। দ্বিতীয় জনের ক্ষেত্রেও একই রকম স্নায়ু–সম্পর্কিত দুর্বলতার লক্ষণ দেখা দেয়। দু’জনের নমুনা পরীক্ষায় জিবিএস সংক্রমণের ইঙ্গিত মেলে।’
প্রসঙ্গত, জিবিএস সাধারণত একটি বিরল স্নায়ুজনিত অসুখ, যেখানে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা হঠাৎই নিজের স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করতে শুরু করে। ফলে হাত–পা দুর্বল হয়ে আসা, দাঁড়াতে বা হাঁটতে অসুবিধা, এমনকি কখনও কখনও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে অধিকাংশ রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
দু’টি ঘটনার পরেই সতর্ক হয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে দ্রুত দল পাঠানো হয়েছে। রোগীদের সঙ্গে গত কয়েকদিন কারা কারা সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। তবে দপ্তর জানিয়েছে, আপাতত ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিস্থিতি নেই।
চিকিৎসকরা সাধারণ মানুষের উদ্দেশে জানিয়েছেন, হাতে–পায়ে অস্বাভাবিক দুর্বলতা, বারবার হোঁচট খাওয়া, শরীর সচেতনতা কমে যাওয়া বা মুখের পেশি কাজ না করার মতো অনুভূতি হলে দেরি না করে নিকটবর্তী হাসপাতালে যেতে হবে। তাঁরাই বলেন, ‘জিবিএস ভয়ঙ্কর নয়, ভয়াবহ হয় দেরি করলে।’
এ মুহূর্তে দু’জন রোগীর অবস্থার ওপর দিনভর নজর রাখছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য জানানো হবে।