• SIR নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের! জনস্বার্থ মামলায় স্পষ্ট হল রাজ্যে কাদের কোনও নথি দেখাতে হবে না...
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্ণবাংশু নিয়োগী: ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) (SIR) নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল গত শুক্রবার। এই মামলা দায়ের করতে চেয়ে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। আজ এই মামলার শুনানি হল।

    পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে এসআইআর-এর প্রয়োজন কী? প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী। কেন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন করা হচ্ছে? মামলাকারী চান, ২০০২ সালের ভোটার তালিকা সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ করুক নির্বাচন কমিশন। প্রয়োজনে এসআইআর প্রক্রিয়ার উপর আদালতের নজরদারি থাক। এই আবেদন শুক্রবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে জানানো হয়েছিল।

    SIR প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের জনস্বার্থ মামলয় কমিশনকে (Election Commission) রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চের। SIR করার ক্ষেত্রে কী দেখা হচ্ছে, সেটা জানাতে হবে কমিশনকে। ১৯ তারিখের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। 

    SIR তো শেষ হয়ে যায়নি। সেটা শুরু হয়েছে। কতদিন সময় লাগবে সেটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আলোচনা হয়েছে - প্রধান ডিভিশন বেঞ্চ

    মামলাকারি আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জ্জি জানান, 'বিএলওদের (BLO) এই রাজ্যে হুমকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া আত্মহত্যার রিপোর্ট সামনে আসছে। তবে তারা লিগালিটি জানা নেই। আমরা SIR চ্যালেঞ্জ করছি না। শুধু SIR প্রসেস নিয়ে আমাদের বক্তব্য আছে'। 

    পাল্টা কমিশন জানিয়েছে, 'আধার নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, আধার কার্ড দেখা হচ্ছে। কিন্তু সেটা নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। কমিশন আরও জানায় যে, সুপ্রিম কোর্টে এমন কোনও নির্দেশ নেই যে সব মামলা ট্যাগ হয়ে যাবে। কিন্তু তামিলনাড়ু রাজ্যের একটি দল মামলা করেছে'। 

    ২০০২ সালে শেষবার SIR হয়েছিল, সেই সময় যাদের নাম ভোটার লিস্টে ছিল তাদের নতুন করে কোনো নথি দিতে হবে না। এবারকার SIR ২০২৫ সালের ভোটার লিস্টকে ভিত্তি করেই হচ্ছে- আদালতে জানাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। 

    মামলাকারির আইনজীবী জানান, দিকে দিকে BLO রা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন, তারা সরকারি কর্মী, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হোক। 

    সব শুনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বলেন, 'সরকার জানে কী ভাবে তার কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে হয়। আলাদা করে কোনও নির্দেশ দেওয়ার দরকার নেই'।

    প্রসঙ্গত, গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গে (SIR in Bengal) এসআইআর ঘোষণা করা হয়েছে। ৪ নভেম্বর থেকে বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করার কাজ শুরু করেছে। বিহারে ইতিমধ্যে এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আজ বিহারের প্রথম দফা নির্বাচন। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এসআইআর-এর পর বিহারের তালিকা থেকে ৩০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। অভিযোগ, এসআইআর-এর নামে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারও গণতান্ত্রিক অধিকার যাতে কেড়ে নেওয়া না-হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে, দাবি তৃণমূলের। অন্য দিকে, বিজেপির পাল্টা দাবি, এসআইআর-এর মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটার এবং অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ দেওয়া হবে। একাধিক জায়গার ভোটার হিসাবে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের নামও বাদ দেওয়া হবে। কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যাবে না বলে বিজেপির তরফে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অযথা আতঙ্ক ছড়়ানোর অভিযোগ তুলেছে তারা।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)