• আরজি কর কাণ্ডে ধাক্কা রাজ্যের! প্রতিবাদী অনিকেত মাহাতোকে নিয়ে বড় রায় আদালতের...
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্ণবাংশু নিয়োগী: আরজি করে (RG Kar Case) ডাক্তারি ছাত্রীর ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের (R G Kar Junior doctor) আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সেই অনিকেত মাহাতর (Aniket Mahata) বদলির মামলায় (Transfer case) ফের বড় ধাক্কা খেল রাজ্য (West Bengal Government)। চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে পোস্টিং দিতে হবে আর.জি কর মেডিক্যাল কলেজেই। সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বহাল রেখে জানাল ডিভিশন বেঞ্চ। 

    বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রায় বহাল রাখল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ। গত ২৪ শে সেপ্টেম্বরের নির্দেশ বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। গত সেপ্টেম্বর মাসে উচ্চ আদালতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, অনিকেতকে আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগেই পোস্টিং দিতে হবে। রাজ্যের আইনজীবী ৭ অক্টোবর পর্যন্ত রায় স্থগিত রাখার আর্জি জানালে তা-ও খারিজ করে দেন বিচারপতি। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আর্জি ফের খারিজ হয়ে গিয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল রেখেছে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ।

    পোস্টিং বিতর্কে রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন অনিকেত মাহাতো। আর. জি কর মেডিক্যাল কলেজের পরিবর্তে অনিকেত মাহাতোকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ পোস্টিং দেওয়া হয়। ২৭ মে ' ২০২৫ এই পোস্টিং সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। 

    ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, 'এটা খুবই লজিক্যাল বিষয় যে প্রার্থীর মেধার ভিত্তিতেই পোস্টিং হওয়া উচিত। রাজ্য যদি মেধার ভিত্তিতে নিয়োগে স্বচ্ছতা না রাখে, তবে সেটি আইনবিরুদ্ধ।'

    আদালত আরও জানায়, উচ্চ মেধার প্রার্থীর ক্ষেত্রে তাঁর পছন্দের জায়গা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও সদিচ্ছা দেখানো রাজ্যের কর্তব্য। কিন্তু অনিকেতের ক্ষেত্রে রাজ্যের আচরণে সেই সদিচ্ছা দেখা যায়নি।

    অনিকেতের বক্তব্য ছিল, সব প্রার্থীকে পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে তাদের পছন্দ জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁকে-সহ মাত্র তিনজনকে সেই পছন্দের জায়গা দেওয়া হয়নি। বাকিদের দেওয়া হয়েছে নিজেদের পছন্দমতো কলেজ। তাই এই বৈষম্যের প্রতিবাদেই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।

    রাজ্যের তরফে আইনজীবী যুক্তি দেন, স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় অনিকেতের র‍্যাঙ্ক ছিল ২৪। তাই তিনি কিভাবে দাবি করতে পারেন যে, তাঁকেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে দিতে হবে?

    অনিকেত মাহাতো দাবি করেন, যে তার র‍্যাঙ্ক ২৪ । আর.জি কর হাসপাতালে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে ৪ টি শূন্যপদ আছে। তার মধ্যে ১ টি শূন্যপদে মেধাতালিকায় অনিকেতের আগে থাকা একজন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। ২টি শূন্যপদে ২৬ এবং ৩৪ র‍্যাঙ্ক করা দুই চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ অনিকেত নিয়োগ পাননি। 

    ৮৭১ জনের মধ্যে ৮৬৯ জনের পোস্টিং SOP(Standard Operating Procedure) মেনেই হয়েছে। কিন্তু অনিকেত মাহাতো-সহ দুজন চিকিৎসকের ক্ষেত্রে SOP মানা হয়নি। রাজ্য এর কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। পর্যবেক্ষনে জানান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। 

    SOP তৈরিই করা হয় যাতে প্রত্যেকে সমানাধিকার পান। SOP-কে মান্যতা না দিয়ে রাজ্য সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারাকে (সমানাধিকার সংক্রান্ত ধারা) অমান্য করতে পারে না। পর্যবেক্ষনে জানান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।

    এই রায়কে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ রাজ্যের 'একতরফা বদলির রাজনীতি''র বিরুদ্ধে বড় জয় হিসেবে দেখছেন।

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)