‘জন গণ মন ব্রিটিশদের জন্য লেখা’! ফের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি সাংসদের
প্রতিদিন | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য। এবার ভারতের জাতীয় সঙ্গীত সম্পর্কে ভুল তথ্য পেশ করে বিপাকে জড়ালেন বিজেপি নেতা। কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ বিশ্বেশ্বর কাগেরির দাবি, ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’ লেখা হয় ব্রিটিশ আধিকারিকদের স্বাগত জানানোর জন্য। তাঁর মতে দেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়া উচিত ছিল ‘বন্দে মাতরম’। এই পরেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে দেশের রাজনীতিতে।
এক অনুষ্ঠানে কাগেরি দাবি করেন, ‘বন্দে মাতরমকে জাতীয় সঙ্গীত করার দাবি ওঠে। আমাদের পূর্বপুরুষরা বলেন বন্দে মাতরম এবং ব্রিটিশ আধিকারিকদের স্বাগত জানাতে লেখা গান ‘জন গণ মন’ দুটিই থাকুক, এবং আমরা তা মেনে নি।”
তাঁর বক্তব্যের পরেই দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায় কর্ণাটকের শাসকদল কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্ক খারগে। বিজেপি এবং আরএসএস এর বিরুদ্ধে ‘হোয়াটসঅ্যাপ ইতিহাস’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডেলের একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “আরও একটি দিন। আরএসএসের ‘হোয়াটসঅ্যাপ ইতিহাসে’র আরও একটি পাঠ। বিজেপি সাংসদ শ্রী কাগেরি এখন দাবি করছেন যে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ‘ব্রিটিশ’। সবথেকে বড় ভুল।” তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১১ সালে ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’ লেখেন। এর কিছু অংশ পরে ‘জন গণ মন’ হয়। এটি সেই বছরই জাতীয় কংগ্রেসের একটি অধিবেশনে গাওয়া হয়। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই গান গাওয়া হয়নি। আরএসএসকে আক্রমণ করে খাড়গে দাবি করেন যে এই সংগঠনের ‘সংবিধান, তেরঙা এবং জাতীয় সঙ্গীতকে অসম্মান করার ইতিহাস রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই ভাইরাসের প্রতিকার করা দরকার।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১১ সালের ১১ ডিসেম্বর ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’ রচনা করেন। এরপরেই করোনেশন পার্কে দিল্লি দরবারের আয়োজন করা হয়েছিল পঞ্চম জর্জের সমর্থনে। কিন্তু গানটি প্রথম গাওয়া হয়েছিল ১৯১১ সালের ২৮ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেস অধিবেশনে। ১৯১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদি ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা দিবসেও এটি গাওয়া হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরবর্তীকালে নিজেই এই বিষয়ে সব সংশয় দূর করেন। তিনি জানিয়ে দেন, এই গান ব্রিটিশদের জন্য লেখা নয়।