২০০২ সালের তালিকায় নাম নেই, অমিল পুরনো নথিও, ‘SIR আতঙ্কে আত্মঘাতী’ ব্যক্তি!
প্রতিদিন | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজ্যে অব্যাহত মৃত্যুমিছিল। বৃহস্পতিবার বহরমপুরে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। পরিবারের অভিযোগ, এসআইআরে নিজের নাম তোলা নিয়ে আতঙ্কের জেরেই এমন চরম পদক্ষেপ নিলেন তারক সাহা নামে ওই ব্যক্তি। তাঁর বয়স ৫২ বছর। জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নেই এবং পুরনো কোনও নথিও তাঁর কাছে নেই। সেই কারণে চলতি বছর ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনে কীভাবে নাম তুলবেন, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তারকবাবু। তার জেরেই বৃহস্পতিবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তদন্ত শুরু করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি বহরমপুর পুরসভা এলাকায়। নিহত তারক সাহা বহরমপুর পৌরসভার ২৪ নং ওয়ার্ডের গান্ধী কলোনি উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা তারক সাহা। দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে ওই এলাকায় বসবাস করেন। মশলামুড়ি বিক্রি করে জীবনযাপন করতেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, এসআইআর আবহে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় এবং পুরনো কোনও নথিপত্র না থাকায় চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। অনেক চেষ্টা করেও কোনও নথিপত্র জোগাড় করতে পারেননি। আর সেই কারণেই দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার আতঙ্কে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন তারক সাহা, দাবি পরিবারের। ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তাকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তারক সাহার মৃত্যুর পর থেকে এসআইআর আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে এলাকাবাসীকে। খবর পাওয়ামাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছন বহরমপুর পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার জয়ন্ত প্রামাণিক। তিনি বলেন, ”বিরোধীরা চক্রান্ত করে ভুল তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলছে। এলাকার মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বলছি।” অন্যদিকে, তারক সাহার স্ত্রী প্রিয়া সাহা পরিচারিকার কাজ করেন। এদিন ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। প্রিয়া সাহা জানান, রাতে তাঁর স্বামী ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না পাওয়া নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন। বিষয়টি বন্ধুবান্ধবদেরও জানিয়েছিলেন তারক সাহা। আর আজ তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া গেল। তদন্ত শুরু করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ।