• শ্রুতিনাট্যরূপে এবার সামনে আসছে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’
    এই সময় | ০৬ নভেম্বর ২০২৫
  • মাইকেল মধুসূদন দত্তের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি— ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। রামায়ণের কাহিনি এই সৃষ্টির মূল উপজীব্য। কিন্তু এখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র নন রাম, এর নায়ক মেঘনাদ। এবং তাঁর পশ্চাৎপটে আছেন লঙ্কেশ রাবণ এবং রাক্ষসকূল।

    পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার মধুসূদনের চিত্ত আলোড়িত হয়েছিল পশ্চিমী সভ্যতার উদার আলোকধারার স্পর্শে। ইংরেজিতে সাহিত্য রচনা ছেড়ে যখন তিনি মাতৃভাষার ভূমিতে ফিরলেন, তাঁর অনুভব ও লেখনিতে ফুটে উঠেছিল পুরাণকথা ও মহাকাব্য। উপরন্তু সে সব কাহিনি পেল নতুন মাত্রা। তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। রামায়ণের ধীরোদাত্ত নায়ক রাম এই নতুন ভাবনায় সাধারণ চরিত্রে পর্যবসিত। লক্ষ্মণও তাই। উপরন্তু এখানে সে কপটযোদ্ধা। কিন্তু রাম দেবকূলের প্রাসাদে ধন্য। তাই দেবদেবীরাও কপটাচারী হন। ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করেন রাক্ষসকূলের বিরুদ্ধে।

    অন্য দিকে মেঘনাদ বীর, বীরপর্ণা তাঁর পত্নী প্রমীলা। আর রাবণ, একের পর এক পুত্র, ভ্রাতা, মিত্রের নিধনে শোকাচ্ছন্ন। তবু পুত্রবধ প্রতিবিধানিতে তিনি ঝড়াকারে যুদ্ধে অগ্রসর হন। তাঁর প্রবল বীরত্বের সামনে পরাভূত রসু সৈন্য এমনকী সৈন্য–সহ ইন্দ্রও। রাবণের প্রবল ক্রোধ লক্ষ্মণ নিহত করে তবেই নিরস্ত হয়। হতাশ রাবণ রামের কাছে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি ভিক্ষা করেন।

    ১৮৬১ সালে প্রকাশিত এই গ্রন্থ কেন আজও নতুন করে ভাবায়? কয়েক দশক পরেও, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ তার জৌলুস ও জনপ্রিয়তা কী ভাবে একই রকম অটুট রেখেছে?

    পরিচালিকা বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ মনে করেন ‘মাইকেলের উদার চিত্তের চিন্তা এবং ভাষার বজ্রনির্ঘোষ আবার নতুন করে আলোকিত করছে পুরাণ বা মহাকাব্যের এই সব চরিত্রদের মধ্যেই। যে চরিত্রগুলি তাই আজও অমর। সেই ভাবনা থেকেই মাইকেলের এই মহান সৃষ্টি এই প্রজন্মেও এত সমাদৃত।

    ‘সঙ্কল্পিতা’ সংস্থার বাইশজন শিল্পী এই শ্রুতিনাটকে অংশ নিচ্ছেন। আবহে সন্দীপ দে। আলো গোপাল ঘোষের। ধ্বনিতে হাসি পাঞ্চাল। বিজয়লক্ষ্মী বর্মণের পরিচালনায়। শুক্রবার, উত্তম মঞ্চে।
  • Link to this news (এই সময়)