হাই কোর্টের নির্দেশের পরও দেশে ফেরা অনিশ্চিত! ‘বাংলাদেশি’ সোনালি, সুইটির বাড়িতে SIR ফর্ম
প্রতিদিন | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম: ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পুশব্যাক করে পড়শি দেশে পাঠিয়ে দেওয়া সোনালি ও সুইটি বিবির বাড়িতে পৌঁছল এসআইআরের ফর্ম। দিল্লি পুলিশ অন্তঃসত্ত্বা সোনালি ও সুইটিকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে গ্রেপ্তার করার পর রাতের অন্ধকারে দু’জনকে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ। এবার তাঁদেরই বাড়িতে পৌঁছে গেল এনুমারেশন ফর্ম। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বিএলও-রা পৌঁছে দেন এই ফর্ম।
সোনালির বাবা ভদু শেখ এবং মা জ্যোৎস্না বিবি জানান, তাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকার ৬৮৯ নম্বর পাতায় রয়েছে। সিরিয়াল নম্বর ১০০। তবুও তাঁদের মেয়েকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। ভদুর দাবি, “যদি আমরা ভারতীয় না হতাম, তাহলে কি নির্বাচন কমিশন ফর্ম দিত? কিন্তু আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অন্য দেশে বন্দি, এটা কি ন্যায়বিচার?” এই ব্যাপারে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ এবং পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, “একদিকে নির্বাচন কমিশন ওদের পরিবারের হাতে ভোটের ফর্ম দিচ্ছে, অন্যদিকে কেন্দ্রের সরকার বাঙালিদের বাংলাদেশি বলে পুশব্যাক করছে। কেন্দ্রের এই দ্বিচারিতা বাংলার মানুষ ২০২৬-এর ভোটে জবাব দেবে।”
ছ’সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আটক সোনালি, সুইটি ও আরও চারজনকে দ্রুত ভারতে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু অভিযোগ, তারপরে ছয় সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও বিদেশমন্ত্রকের তরফে কোনও উদ্যোগ নেই। এই বিষয়ে মন্ত্রক নীরব। সোনালীর বাবার আশঙ্কা, মেয়ের সন্তান বাংলাদেশের কারাগারে ভূমিষ্ঠ হলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা আরও বাড়বে। অন্যদিকে সুইটির মা লজিনা বিবি ও দাদা আমির শেখ বলেন, “মেয়ে আর নাতিরা কবে ফিরবে জানি না। চোখের জল ফেলে আমাদের দিন কাটছে।”
গত জুনে দিল্লির রোহিণী এলাকা থেকে দানিশ শেখ ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সোনালি বিবিকে তাঁদের পাঁচ বছরের সন্তান-সহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একইভাবে সুইটি ও তাঁর দুই সন্তানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অভিযোগ ওঠে, বিএসএফ তাঁদের বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ়ে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে বন্দি।