নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ‘নীতীশ কুমার হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীকে এড়িয়ে চলছেন কেন?’ পশ্চিম চম্পারণের নির্বাচনী সভা থেকে প্রশ্ন তুলেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। অবশ্য এই প্রশ্ন শুধু বিরোধীদের নয়, আম জনতারও। বস্তুত প্রধনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কোনও নির্বাচনী সভাই আদতে বিজেপি ও সংযুক্ত জনতা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের যৌথ নির্বাচনী সমাবেশ হচ্ছে না। তার নেপথ্যে রয়েছে নীতীশ কুমারের ‘আচরণ’। তাঁর আচরণে বিজেপির অন্দরে দেখা দিয়েছে সংশয়। শংকাও। প্রশ্ন উঠেছে, ভোটপর্ব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নীতীশ কুমার কি বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেছেন?
প্রথম সংশয় তৈরি হয়েছিল পাটনায় এনডিএ জোটের নির্বাচন ইস্তাহার প্রকাশ করার সময়। মাত্র ২৬ সেকেন্ডের মধ্যে সেই ইস্তাহার প্রকাশ শেষ করে নীতীশ কুমার মঞ্চ থেকে নেমে চলে যান। একটাও কথা উচ্চারণ করেননি তিনি। কেন এই সিদ্ধান্ত, তা ঘিরে প্রশ্ন ওঠে। সেই জল্পনার রেশ কাটার হওয়ার আগেই ফের পাটনায় স্বয়ং নরেন্দ্র মোদির রোড শো-তেই গরহাজির নীতীশ কুমার। রোড শোতে নীতীশ কুমার মোদির পাশে দীর্ঘক্ষণ অতিবাহিত না করলেও প্রত্যাশা করা হয়েছিল, অন্তত শুরুতে থাকবেন নীতীশ। কারণ মোদি এবং নীতীশ কুমার একসঙ্গে রোড শো করছেন—এই বার্তা এনডিএ জোটের জন্য ইতিবাচক এক ঐক্যের সংকেত। তা হতে দিলেন না জেডিইউ প্রধান।
তার পরেই এনডিএ জোটে ‘ফাটল’ বলে বিহারের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমেই জোরদার প্রচার শুরু করছে বিরোধীরা। বলা হচ্ছে, আমাদের হারাতে হবে না। বিজেপি এবং সংযুক্ত জনতা দল নিজেরাই পরস্পরকে হারানোর জন্য মরিয়া। বিরোধীদের দাবি, বহু কেন্দ্রেই এই দুই জোটশরিক একে অন্যকে ভোট দেবে না বলে নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের জানিয়ে দিয়েছে। যদিও বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের তরফে বলা হয়েছে, এই ধরনের প্রচারে বিরোধীদের রাজনৈতিক অপরিণতমনস্কতাই প্রমাণিত হয়। কারণ একে অন্যকে হারিয়ে কী লাভ হবে? বিরোধীদের সরকার গঠনের পথ কি আমারই প্রশস্ত করে দেব? বিজেপি কেন্দ্রীয় দপ্তর বলছে, নীতীশ কুমার এবং নরেন্দ্র মোদি প্রচারের শুরুতেই একই মঞ্চে ছিলেন। দু’জনে ভাষণও দিয়েছেন। যদিও প্রশ্ন উঠছে, নীতীশ কুমার কেন তারপর থেকে আর মোদির মঞ্চের ধারেকাছেই নেই? তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এনডিএ শিবিরের। ভোট চলছে যে।