নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: জেএনইউ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে উড়ল লাল আবির। সভাপতি, সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক—চারটি পদেই জয়ী বাম জোট। কিন্তু তার পরেও পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই লাল শিবির। কারণ এই চার আসনের কোনওটায় জয়ের ব্যবধান মাত্র ১০৪। কোনও পদে জয় এসেছে ৪১৪ বা ২২৯ ভোটের ব্যবধানে।
চলতি বছরে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রতিটি সেন্ট্রাল প্যানেল পোস্টে জয়লাভ করেছেন বাম প্রার্থীরা। কিন্তু হারজিতের ব্যবধানে সভাপতি, সহ সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক এবং সম্পাদক—জেএনইউ ছাত্র সংসদের চার পদেই বাম জোটের সঙ্গে একেবারে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিল সংঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। প্রতিটি সেন্ট্রাল প্যানেল পোস্টেই বাম জোট প্রার্থীদের একেবারে ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলল গেরুয়া শিবির। সমানে সমানে লড়াই হলেও গতবারের জেতা আসন খোয়াতে হয়েছে বিদ্যার্থী পরিষদ। এবছর যুগ্ম সম্পাদক পদটি এবিভিপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বামেরা। তবে নির্বাচনে হারজিতের এহেন ব্যবধানে আপাতত একটি প্রশ্ন ঘিরেই চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। তা হল, জেএনইউয়ের তথাকথিত বাম দুর্গে কি ক্রমশ ফাটল চওড়া হচ্ছে?
জেএনইউ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সভাপতি পদে বাম প্রার্থী অদিতি মিশ্রর প্রাপ্ত ভোট প্রায় দু’হাজার। তাঁর থেকে মাত্র ৪০০টির মতো ভোটে হেরে দ্বিতীয় হয়েছেন এবিভিপির বিকাশ প্যাটেল। সহ সভাপতি পদে বাম প্রার্থী গোপিকার প্রাপ্ত ভোট প্রায় তিন হাজার। এবিভিপির তন্যা কুমারী ওই পদে পেয়েছেন দু’হাজারের কিছু কম ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে বাম প্রার্থী সুনীল যাদব পেয়েছেন দু’হাজারের কিছু বেশি ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এবিভিপির রাজেশ্বরের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান মাত্র ১০৪ ভোটের। যুগ্ম সম্পাদক পদে বাম প্রার্থী দানিশ আলি পেয়েছেন প্রায় দু’হাজার ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এবিভিপি প্রার্থী অনুজ পেয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৮০০টি ভোট। যদিও কংগ্রেসের ছাত্র শাখা এনএসইউআই এই নির্বাচনে বিশেষ ছাপ ফেলতে পারেনি। তবে এবারের বাম জোটে এআইএসএফ শামিল হয়নি। তারা আলাদা প্রার্থী দিয়েছিল। তার প্রভাব পড়েছে ভোটের ব্যবধানে। যদিও এসএফআইয়ের দাবি, ‘জেএনইউয়ে বামেরা আরও বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা গেরুয়া শিবিরের বিভাজন নীতি মেনে নেয়নি। এবিভিপিকে তারা বাতিল করেছে। তাই গতবার একটি আসনে জিতে গেলেও এবারে তা খোয়াতে হয়েছে বিদ্যার্থী পরিষদকে।’ তবে একদিকে হার-জিতের ব্যবধান, অন্যদিকে জেএনইউয়ে স্কুল কাউন্সিলর নির্বাচনে ভালো ফল—এই দু’য়ের প্রেক্ষিতে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দাবি, ‘ধীরে হলেও ক্রমশ জেএনইউয়ে প্রভাব বিস্তার করছে গেরুয়া শিবির। বামেদের রাশ আলগা হচ্ছে।’ স্কুল কাউন্সিলর পদে ভালো ফল করেছে দলিত ছাত্র সংগঠন বাপসাও।