নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: হিন্দু, শিখ কিংবা বৌদ্ধ সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির কেউ মুসলিম বা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করলে কি সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন? এব্যাপারে যাবতীয় বিতর্ক, দাবি-পালটা দাবির অবসান ঘটিয়ে স্থায়ী সিদ্ধান্তে আসার প্রক্রিয়া ফের পিছিয়ে গেল। এব্যাপারে ২০২২ সালে একটি কমিশন গঠন করেছিল কেন্দ্র। চলতি নভেম্বর ছিল রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, এবছরও রিপোর্ট জমা দিতে পারবে না কমিশন। তাই এই সময়সীমা ছ’মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত।
এই প্রথম নয়, এর আগেও বেড়েছে সময়সীমা। সুপ্রিম কোর্টের একটি বিশেষ নির্দেশিকার জেরেই শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি কে জি বালাকৃষ্ণণের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছিল। দু’বছরের মধ্যে তথ্য, পরিসংখ্যান, সুপারিশ এবং বিশ্লেষণসহ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বর ছিল নির্ধারিত সময়সীমা। কিন্তু তার মধ্যে রিপোর্ট পেশ করা যায়নি। ফলে আরও এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল বর্ধিত সময়সীমার মধ্যেও রিপোর্ট জমা দিতে পারছে না কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছিল, এই বিষয়টি নিয়ে জমা পড়া প্রচুর আবেদন নিবেদন রিট পিটিশন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবছে? কেন্দ্র সাফ জানায়, পূর্বতন কমিশনের রিপোর্ট ও সুপারিশ অসম্পূর্ণ। তাই গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য একটি এনকোয়ারি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
২০০৭ সালে এই সংক্রান্ত একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল— জাস্টিস রঙ্গনাথ মিশ্র কমিশন। ওই কমিশনের সুপারিশ ছিল, যেসব অনগ্রসর শ্রেণির নাগরিক ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম ও খ্রিস্টান হয়েছে, তাদের তপশিলি সংরক্ষণের মর্যাদা দেওয়া উচিত। কিন্তু সরকার তা মানতে চায়নি। কারণ, কমিশনের রিপোর্টে কোনও বিস্তারিত ও পূর্ণাঙ্গ ফিল্ড নোটস ছিল না। পাশাপাশি আরও যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে, মূলত অস্পৃশ্যতা থেকে রক্ষা পেতেই ধর্মান্তরিত হয় অনগ্রসর শ্রেণির মানুষরা। কিন্তু মুসলিম ও খ্রিষ্টান ধর্মে তো সামাজিক অস্পৃশ্যতা থাকার কথা নয়। অতএব সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই। ২০২২ সালে তাই পৃথক একটি কমিশন গঠন করে কেন্দ্র।