• ক্রিকেট ছেড়ে বেটিং অ্যাপে! ধাওয়ান ও রায়নার ১১ কোটি সম্পত্তি ‘দখল’ ইডির
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: বিপাকে ভারতীয় দলের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার সুরেশ রায়না ও শিখর ধাওয়ান। বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিল ইডি। দুই ক্রিকেটারের ১১.১৪ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এক্স হ্যান্ডলে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে ইডি। রায়নার ৬.৬৪ কোটি টাকা মূল্যের মিউচুয়াল ফান্ড এবং ধাওয়ানের ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। 

    রায়না বা ধাওয়ানের মতো প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটারের নাম বেটিং অ্যাপের দুর্নীতিকাণ্ডে সরাসরি জড়িয়ে পড়া নজিরবিহীন। দুই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ইডির পদক্ষেপ তোলপাড় ফেলেছে ক্রিকেট মহলে। শুধু ক্রিকেট নয়, বলিউড এবং টলিউডের বহু তারকাও বেটিং অ্যাপের প্রচারমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তালিকা বেশ দীর্ঘ। ২০১১ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম কাণ্ডারি যুবরাজ সিং, রবীন উথাপ্পার নামও জড়িয়েছে। এছাড়া বলিউড অভিনেতা সোনু সুদ, অভিনেত্রী ঊর্বশী রাওতেলা, বাংলার অঙ্কুশ হাজরা, মিমি চক্রবর্তীও ইডির নজরে। 

    আইপিএল মানেই ক্রিকেট ও বিনোদনের ককটেল। গ্ল্যামারের ছড়াছড়ি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার লোভ দেখানোর কৌশল নিয়েছিল বেটিং সংস্থাগুলি। বেটিং অ্যাপকে জনপ্রিয় করার জন্য মুখ হিসেবে ব্যবহার করা হত তারকাদের। পরিবর্তে মিলত বিপুল অর্থ। আখেরে নিঃস্ব হত আম আদমি। কারণ, বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে চলত হাওলা লেনদেন। এই টাকা জঙ্গি সংগঠনও পেয়েছে বলে অভিযোগ। তারপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। নিষিদ্ধ হয় একাধিক বেটিং অ্যাপ। ‘ওয়ান এক্স বেট’ তার মধ্যে অন্যতম। এই অ্যাপেরই প্রচারের মুখ ছিলেন রায়না-ধাওয়ান। তাঁদের সঙ্গে ঠিক কেমন চুক্তি হয়েছিল, সেটাই এখন খতিয়ে দেখছে ইডি। দুই ক্রিকেটারের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে। সেই সময় যুবি, উথাপ্পাদেরও তলব করা হয়। তারপরই  রায়না, ধাওয়ানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ।  

    ভারতীয় ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনা নতুন নয়। গড়াপেটা কাণ্ডে জড়িয়ে অতীতে নির্বাসিত হয়েছেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজারা। তবে আইপিএল চালুর পর বেটিং, জুয়া, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনা বেড়েছে। কোটিপতি লিগে ম্যাচ গড়াপেটার ঘটনা নড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের ভিত। পেসার এস শ্রীশান্ত নির্বাসিত হয়েছিলেন। প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের জামাতা গুরুনাথ মিয়াপ্পানের নামও জড়িয়েছিল। 

    সেই ধাক্কা সামলে আইপিএল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে বেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক তছরুপের ঘটনায় ইডি যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছে, তাতে অন্য রহস্য খুঁজছে বিরোধীরা। তারা বলছে, সবই লোক দেখানো। তারকাদের ভয় দেখিয়ে দলে টানার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের কথা মাথায় রেখে টার্গেট করা হয়েছে রায়নাকে। বাংলায় নির্বাচনের মুখে ইডিকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে মিমির বিরুদ্ধে। যদি ব্যবস্থা নিতেই হয়, তাহলে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে!
  • Link to this news (বর্তমান)