• তারাতলায় টাঁকশালের জমিতে নিকাশি পাম্পিং স্টেশন তৈরিতে বাধা, কাজ বন্ধ
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগেই কথা হয়েছিল। সেই অনুসারে কাজও শুরু হয়। তৈরিও হয়ে গিয়েছে নতুন নিকাশি পাম্পিং স্টেশনের সাম্প বা কুয়ো। কিন্তু, তার মধ্যেই আচমকা জটিলতায় আপাতত আটকে গিয়েছে তারাতলায় টাঁকশালের জমিতে কলকাতা পুরসভার পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ। জানা গিয়েছে, টাঁকশালের হাতে থাকলেও এই জমি আদপে বন্দরের। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষই পুরসভাকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে। ফলে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পাম্পিং স্টেশন থেকে শুরু করে সংলগ্ন রাস্তায় পাইপলাইন পাতার কাজও আটকে পড়েছে। কিন্তু, সমস্ত ধরনের অনুমোদন পেয়ে কাজ শুরু করার পরেও কেন ব্যাগড়া দিচ্ছে বন্দর, সেই প্রশ্ন তুলেছে পুরসভা। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে পুরসভা জানাচ্ছে, বন্দরের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত জটিলতা কাটবে।

    জানা গিয়েছে, টাঁকশালকে ৯৯ বছরের লিজে জমি দিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। তারাতলায় টাঁকশালের সেই জমির ভিতরেই অনেকটা জায়গা ছিল। সেখানে নিকাশি পাম্পিং স্টেশন বাননোর অনুমোদন পায় পুরসভা। বৃষ্টির সময়ে তারাতলা চত্বর, গড়াগাছা রোড, মিন্ট বা টাঁকশাল অফিস, মিন্ট কলোনি, হেলেন কেলার সরণি, ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড সহ আশপাশের এলাকায় ভালো পরিমাণে জল জমে যায়। ভোগান্তি তীব্র হয়। তাই, টাঁকশালের অনুরোধে সেখানে একটি পাম্পিং স্টেশন বানানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। নিকাশি বিভাগের এক কর্তা বলেন, ওখানে পথ দুর্ঘটনায় এক কাউন্সিলারের ছেলের মৃত্যু ঘটে। তারপরেই বন্দর কর্তৃপক্ষ, টাঁকশাল, পুরসভার একটি বৈঠক হয়। ওখানে সব রাস্তাই বন্দরের আওতাভুক্ত। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সেখানে নিকাশি উন্নয়নের কাজ পুরসভা করতে পারে। তার পরিপ্রেক্ষিতে টাঁকশালের জমিতে নিকাশি পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজে হাত দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই সেই কাজ অনেকটা এগিয়েছে। কিন্তু, আচমকা ব্যাগড়া দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ, অভিযাগ পুরসভার।

    নিকাশি বিভাগ জানাচ্ছে, ৭৭ কোটি টাকার প্রকল্প। সবকিছু আগে থেকেই জানত বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্ত, গত রবিবার থেকে তারা কাজ করতে দিচ্ছে না। ওই কর্তা বলেন, পাম্পিং স্টেশন থেকে সিপিটি ক্যানাল পর্যন্ত যে লাইন যাবে, সেই পাইপও পাতা হয়ে গিয়েছে। গড়াগাছা রোড, হেলেন কেলার সরণি, ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোডে পাইপলাইন পাতার কাজ দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছে বন্দর। গত প্রায় এক সপ্তাহ হল মিন্টের ভিতরে যে পাম্পিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে, সেই কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সবকিছু আগে থেকে জেনেও কেন বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ আটকাচ্ছে, তা নিয়ে আমরা অবাক। 

    পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং বলেন, সমস্যা নিয়ে ওদের সঙ্গে কথা চলছে। আমিও ই-মেল করেছিলাম চেয়ারম্যানকে। মেয়র ফিরহাদ হাকিমও বন্দরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন। বন্দরের সঙ্গে পুরসভা যৌথভাবে জায়গাটি পরিদর্শনও করেছে। আশা করছি, খুব দ্রুত জটিলতা কাটবে। এনওসি ওরা দিয়ে দেবে।

    পুরসভা সূত্রে খবর, রাস্তায় নিকাশি পাইপ বসানোর জন্য যে খোঁড়াখুঁড়ি হবে, আচমকা এখন বন্দর তার জন্য টাকা (রেস্টোরেশন কস্ট) দাবি করেছে। সেখানেই জটিলতা আরও বেড়েছে। টাকা না দিলে বন্দর কর্তৃপক্ষ এনওসি দিচ্ছে না। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)