• এক রাতে শহরে পরপর তিন ছিনতাইয়ে উদ্বিগ্ন লালবাজার, একই বাইক নিয়ে ‘অপারেশন’ দুই দুষ্কৃতীর
    বর্তমান | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এক রাতে শহরের তিনটি জায়গায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল। বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা পথচারীদের গলা থেকে সোনার চেন ছিনতাই করে পালায় বলে অভিযোগ। গিরিশ পার্ক, আমহার্স্ট স্ট্রিট ও উল্টোডাঙা এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় একই বাইক জড়িত বলে জানা গিয়েছে। বুধবার রাতে শহরে পরপর তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন লালবাজার। সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে বাইকের নম্বর পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খোঁজে নেমেছে সংশ্লিষ্ট থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামের এক ব্যক্তি। আচমকা পিছন থেকে একটি বাইক এসে তাঁর গলায় থাকা সোনার হার ছিনতাই করে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হয়ে পড়েন তিনি। চোর চোর বলে চিৎকার করলে তারা বাইক নিয়ে দ্রুতগতিতে বিবেকানন্দ রোড-বিধান সরণী ক্রসিংয়ের দিকে চলে যায়। ওই ক্রসিং পেরলেই গিরিশ পার্ক থানা এলাকা। বাইকে থাকা দু’জনের মাথায় হেলমেট ছিল। ওই ব্যক্তি এরপর আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ছিনতাই হওয়া সোনার হারের মূল্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ছিনতাইয়ের কেস রুজু করেছে পুলিশ। এর মাঝেই গিরিশ পার্ক থানায় খবর আসে, তাদের এলাকাতেও একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সেখানেও বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা এক পথচারীর সোনার হার ছিনতাই করে পালিয়েছে। পরে অভিযোগকারী থানায় গিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ জানান। এক্ষেত্রেও ছিনতাই হওয়া সোনার হারের দাম তিন লক্ষ টাকার কাছাকাছি বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে উল্টোডাঙা এলাকাতেও একই কায়দায় সোনার হার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

    তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রাত সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সবকটি ক্ষেত্রেই মোডাস অপারেন্ডি এক। তা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, একই গ্যাং এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত। একই বাইক নিয়ে তারা অপারেশন চালিয়েছে। সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, দামি বাইক নিয়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। পিছনে বসা দুষ্কৃতীই পথচারীদের গলায় থাকা সোনার হার ধরে টান মেরেছে। হেলমেট পরে থাকায় তাদের মুখ বোঝা যাচ্ছে না। তবে বাইকের নম্বর হাতে পেয়েছে লালবাজার। সেই সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দুই দুষ্কৃতী পূর্ব কলকাতার বাসিন্দা। তারা একের পর এক ছিনতাই করতে করতে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তারা কোন রুটে গিয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি কলকাতা লাগোয়া এলাকায় তারা আর কোনও অপরাধ করেছে কি না, তাও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে ছিনতাইয়ে অভিযুক্ত কেউ সদ্য জামিনে ছাড়া পেয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, তা নিয়েও খোঁজখবর চালাচ্ছেন তাঁরা।
  • Link to this news (বর্তমান)