সন্দীপ চক্রবর্তী: বিশেষ নিবিড় সংশোধন কর্মসূচি চালু হতেই প্রকাশ পেল ঝাঁপি। যে লোক ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনেও বহাল তবিয়তে সশরীরে হাজির হয়ে ভোটটা দিয়েছেন, সেই লোকটাই আচমকা দেখলেন তিনি নেই। দেশের ভোটার হিসাবে তাঁর আর কোনও অস্তিত্বই নেই! অর্থাৎ ভোটার লিস্ট থেকে কাটা গিয়েছে এক বৈধ ভোটারের নাম।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বুথ লেভেল অফিসার অর্থাৎ বিএলও-রা এমন বহু অভিযোগ পাচ্ছেন প্রায় সব কেন্দ্রেই। কীভাবে এমন বহু নাম বাদ গিয়েছে তা নিয়ে অবাক তাঁরা। স্ক্রুটিনির ক্ষেত্রে একজনের মৃত্যুতে স্বামী বা স্ত্রীর নাম কীভাবে বাদ যেতে পারে? হাবড়ার বাণীপুর হোক বা দুর্গাপুরের কেন্দ্র, সব ক্ষেত্রেই এমনটা শুনতে হচ্ছে। বিএলওদের কাছে অবশ্য এর দাওয়াই স্পষ্ট নয়। যেহেতু ২০২৫ সালের লিস্টে নাম নেই, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা এনুমারেশন ফর্ম দিচ্ছেন না। ফলে লিস্ট থেকে নাম হারানো ওই ব্যক্তি অথৈ জলে পড়ছেন। এ ব্যাপারে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘টেকনিক্যালি’ কী করা উচিত সেটা জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “৯ ডিসেম্বরের পর স্বাভাবিকভাবে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে। সে ক্ষেত্রে যা পদ্ধতি রয়েছে অর্থাৎ ৬ নম্বর ফর্ম ও অ্যানেক্সার ফর্ম পূরণ করার পরই নাম তোলা যাবে। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে এমন গোলমাল হতে পারে।”
মূলত ৫৮ দিন সময় থাকছে। ফর্ম কোথায় বা কার কাছে জমা দিতে হবে? এ ব্যাপারে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানাচ্ছেন, সংশ্লিষ্ট বিএলও বা এইআরও অর্থাৎ অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে ফর্ম জমা দেওয়া যাবে। তবে তার আগে দেখে নিতে হবে এসআইআর-এর পর খসড়া তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে কি না। যদিও এই সব ক্ষেত্রে অ্যানুমারেশন ফর্ম না দেওয়ায় খসড়া তালিকায়ও নাম ওঠার প্রশ্ন নেই। বিএলও-রা তাই বাদ
যাওয়া ভোটারদের জানিয়ে দিচ্ছেন যে পরবর্তীতে অর্থাৎ এসআইআর সম্পূর্ণ হলে এটা সংশোধন করা সম্ভব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বললেন, এমন অভিযোগ পাচ্ছি। কয়েকজন ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু আমাদের কাছে কোনও উত্তর নেই। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত অঞ্চলের এক বিএলও বললেন, এমন সমস্যা জানিয়ে কয়েকজন অভিযোগ করেছেন। সে ক্ষেত্রে আমরা জানিয়েছি যে এসআইআর সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।