পিয়ালি মিত্র: ৫ বছরে বেতন ৫৬ লাখ, আর হিসেব বর্হিভূত সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ! আয় বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগে রাজ্য পুলিসের দুর্নীতি দমন শাখার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কলকাতা পুরসভার অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পার্থ চোংদার। আর তাঁর বিপুল সম্পত্তির পরিমাণ দেখে তাজ্জব তদন্তকারীরা। ২০১৭-২০২৩, এই ৫ বছরে কলকাতা পুরসভার অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পার্থ চোংদার বেতন পেয়েছেন মোট ৫৬ লাখ। কিন্তু তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ।
এদিন আদালতে কলকাতা পুরসভার অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পার্থ চোংদারের সম্পত্তির তথ্য তুলে ধরে সরকারি আইনজীবী বলেন, এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র! দুর্নীতি দমনের অনেক মামলা করেছি এই মামলা অনেক বড় যেন হিমালয়! ফিক্সড ডিপোজিট থেকে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, গোল্ড বন্ড থেকে বিমা- সব ক্ষেত্রেই লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করেছেন পার্থ চোঙদার। আদালতে এমনটাই অভিযোগ দুর্নীতি দমন শাখার।
জানা গিয়েছে, নিউ টাউনের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ২৮ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে কোথাও ১০ আবার কোথাও ২০ থেকে ২৫ লক্ষ করে টাকা বিনিয়োগ করেছেন পার্থ চোংদার। শ্বশুর-শাশুড়ি মালদার বাসিন্দা হলেও তাঁদের নামে পার্থ ঠিকানা ও নথি দিয়ে কলকাতায় পাঁচ থেকে ছ’টি অ্যাকাউন্ট খুলে জমা করেছেন ১ কোটি টাকা।
এছড়াও বোলপুরে ৩৬ লাখি বাংলো বাড়ি থেকে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ৬টি ফ্ল্যাটে লগ্নি। স্ত্রীর নামে রিয়েল এস্টেট সংস্থা খুলে তাতেও বিনিয়োগ করেছেন পার্থ। সরকারি কর্মী হয়েও সেই রিয়েল এস্টেট সংস্থার অংশীদার আবার পার্থ চোংদার। বিনিয়োগ করেছেন সোনাতেও। ব্যাঙ্কের লকারে ৭৩৪.৮৫ গ্রাম সোনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই পার্থ চোংদারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।
বাদ নেই বিদেশ যাত্রাও। ২০১৭ থেকে ২০২১, এই সময়কালে বেশ কয়েকবার বিদেশে গিয়েছেন পার্থ চোংদার। বছরে বেতন ১৪ লক্ষ টাকা, এদিকে ব্যাংকে জমেছে ৯০ থেকে ৯৫ লক্ষ টাকা। এই টাকার উৎস কোথায়? এর কোনও উত্তর দিতে পারেননি পার্থ চোংদার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে এল, তারই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। ধৃত পার্থ চোঙদার কলকাতা পুরসভার ‘প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ’-এ কর্মরত ছিলেন। সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি দমন শাখা’-য় অভিযোগ জমা পড়েছিল। তারপরই তারা তদন্তে নামে।