• বিহারে প্রথম দফায় লক্ষণীয়ভাবে বাড়ল ভোটের হার, SIR-এর প্রভাব নাকি প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা? ধন্দে সব শিবিরই
    প্রতিদিন | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
  • বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ভোটের আগে, ভোটের দিন বা তারপরে রক্তের হোলি খেলা আজ বিহারে অতীত। দু-একটি ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া মোটের ওপর শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হল বিহারের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। বড় ঘটনা বলতে ভোট চলাকালীন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর গাড়িতে হামলার ঘটনা। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে ভোটের হার নিয়ে। ভোট বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, নির্ভুল ভোটার তালিকা ভোট শতাংশের হার বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বিহারের ক্ষেত্রে তা খানিকটা বাড়লেও চোখে পড়ার মতো নয়। তবে কি ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ সঠিকভাবে হয়েছিল? প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ভোট গ্রহণ শুরু হতেই সরকার গঠনে আত্মবিশ্বাসী প্রধান প্রতিপক্ষ দুই শিবির।

    বৃহস্পতিবার বিহারে প্রথম দফার ভোটগ্রহন মোটের উপর নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলো। বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমালের খবর অবশ্য পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, লক্ষ্মীসরাই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় সিনহার উপর হামলার খবর। উপ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, নিজের কেন্দ্রে ভোট পরিদর্শন করতে গেলে লালুপ্রসাদের পার্টির লোকেরা তাঁর উপর হামলা চালায়। তিনি অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন।‌ তাঁর গাড়ির ওপর হামলা হয়। আরজেডি সমর্থকেরা গাড়ির ওপর ইট-পাথর ও জুতো ছোড়ে। ‌পরে উপমুখ্যমন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন এনডিএ ফের সরকার গঠন করলে আরজেডির দুষ্কৃতীদের পার্টি অফিস বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।

    সকালে কয়েকটি বুথে বিদ্যুৎ না থাকার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল লালু প্রসাদের দল। ‌নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী মুখ তেজস্বী যাদব ভোট চলাকালীন পুরোদস্তুর প্রচার চালিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দ্বারভাঙ্গা এবং ভাগলপুরে জনসভা করেন। তেজস্বীও গিয়েছেন রাজ্যের অন্যপ্রান্তের জেলাগুলিতে। যেখানে আগামী ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিহারে এনডিএ সরকার গড়বে। ‌কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কল্যাণমূলক কর্মসূচির প্রতি নতুন করে আস্থাজ্ঞাপন করবে মানুষ।

    ‌অন্যদিকে, তেজস্বী যাদবের বক্তব্য, আর মাত্র দিন দশেকের অপেক্ষা।‌ তারপর রাজ্যের সরকার বদলে যাবে। বৃহস্পতিবার সাত সকালে বাবা লালুপ্রসাদ ও মা রাবড়ি দেবীর সঙ্গে ভোট দেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা ও বিহারে মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের পরিবারের অন্য লোকজনও। ভোট দিয়ে বেরিয়েই আত্মবিশ্বাসী তেজস্বী দিলেন বিহারে পরিবর্তনের ডাক। তিনি বলেন, ‘আসুন ভোট দিন। একসঙ্গে নতুন বিহার গড়ি। নতুন সরকার নির্বাচন করুন।’ একইসঙ্গে ১৪ নভেম্বর জয় নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই তাঁর মনে তাও জানিয়ে দিলেন। লালুর পুত্রের দাবি, ১৪ নভেম্বর নতুন সরকার তৈরি হবে। এদিন সকালে পোলিং বুথে ভোট দিতে দেখা যায় জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশ কুমারকেও।

    নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রথম দফায় বিহারে ভোট পড়েছে ৬০.১৩ শতাংশ। ২০২০ সালের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৫৭.২৯ শতাংশ। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি ভোট পড়েছে। তবে ভোটদানের হার আরও কিছুটা বাড়তে পারে। কারণ, বিকেল ৫টার পরেও বিহারের বহু বুথের বাইরে ভোটদাতাদের লাইন রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে বেগুসরাইয়ে, ৬৭.৩২ শতাংশ। এছাড়া বক্সারে ৫৫.১০ শতাংশ, দ্বারভাঙায় ৫৮.৩৮ শতাংশ, গোপালগঞ্জে ৬৪.৯৬ শতাংশ, পাটনা ৫৫.০২ শতাংশ, শেখপুরায় ৫২.৩৬ শতাংশ, এবং বৈশালীতে ভোট পড়েছে ৫৯.৪৫ শতাংশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)