হুগলিতে তৃণমূলকর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন, পনেরো বছর পর দোষী সাব্যস্ত ৮ বামকর্মী
প্রতিদিন | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
সুমন করাতি, হুগলি: পনেরো বছর আগে হুগলির গুড়াপে তৃণমূলকর্মী খুনের ঘটনায় আট বামকর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করল চুঁচুড়া আদলত। আজ, শুক্রবার তাঁদের সাজা ঘোষণা করা হবে। খুনের ঘটনায় দশজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন দু’জনের মৃত্যু হয়।
২০১০ সালে ছেলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দিন খুন হন তৃণমূলকর্মী ক্ষুদিরাম হেমব্রম। ১৮ মার্চ তাঁকে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই দিন মাঠে কাজ করে বন্ধু তপন রুইদাসের বাড়ি গিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম। তারপর আর বাড়ি ফেরননি তিনি। পরদিন নদীর ধারে বস্তাবন্দী দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ ওঠে রাজনৈতিক কারণে ক্ষুদিরামকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ জানানো হয় হুগলির গুড়াপ থানায়।
তদন্তে নেমে মোট দশজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মামলা চলে আদালতে। ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের পর শুরু হয় বিচারপ্রক্রিয়া। বারো জন সাক্ষী দেন এই মামলায়। বিচার পর্ব চলার সময় দুই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। ৮ জন জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন ঠিকই তবে তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয়কুমার শর্মা। আজ, শুক্রবার হবে সাজা ঘোষণা।
আদালত অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেছে একথা শোনার পর ধনিয়াখালি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূল নেতা মুন্সি সাকোয়াত হোসেন বলেন, “নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল ক্ষুদিরামকে। সিপিএমের ভয়ে আমরা ওঁর পরিবারকে পাঁচ বছর অন্য জায়গায় রেখেছিলাম। আজ সেই মামলার অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।” সরকারি আইনজীবী চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বারো জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক তাঁর বয়ানে জানিয়েছিলেন ক্ষুদিরামের শরীরে ২১টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। এই মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি না হলে যাবজ্জীবন।” ক্ষুদিরামের ছেলে সুনীল বলেন, “সেদিন আমার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ছিল। বাবা কাজ সেরে বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাবাকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। দেহ লোপাটের চেষ্টা করে ওরা। বাবা তৃণমূল করতেন। তাই ওঁকে খুন করা হয়। পনেরো বছর পর বিচার পেলাম। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই।”