• চলন্ত ট্রেনেই প্রসব তরুণীর, রেলকর্মী-আধিকারিকরা সদ্যোজাতের নাম দিলেন ‘রাত্রি’
    প্রতিদিন | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
  • অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই জন্ম প্রাণের। চলন্ত ট্রেনের আওয়াজ ছাপিয়ে কান্না শোনা গেল সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের। পুরী-জয়নগর সাপ্তাহিক এক্সপ্রেসের ওই কামরা ক্ষণিক সময়ের জন্য হয়ে উঠেছিল লেবার রুম। কন্যা সন্তান জন্মের কথা শুনেই আনন্দিত ওই কামরার অন্যান্য সহযাত্রীরা। জন্ম দেওয়ার পর সদ্যোজাতকে আঁকড়ে ধরেন মা। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের হিজলি স্টেশনে।

    রেল পুলিশ ও রেল সূত্রে খবর, চলন্ত ট্রেনের কামরাতেই সন্তান প্রসব করলেন ১৯ বছর বয়সী তরুণী রানি কুমারী। বিহারের দ্বারভাঙা এলাকায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি। দিন কয়েক আগে তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ওড়িশার কটকে গিয়েছিলেন। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতে কটক থেকে পুরী-জয়নগর সাপ্তাহিক এক্সপ্রেসে তিনি দ্বারভাঙায় শ্বশুরবাড়িতে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন শাশুড়ি। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ডিভিশন দিয়ে ওই এক্সপ্রেস ট্রেন তখন ছুটে চলেছে। হঠাৎ করেই প্রসবযন্ত্রণা দেখা দেয় রানি কুমারীর। বেনাপুর স্টেশন তখন সবে পার হয়েছে। সামনে হিজলি স্টেশন। এদিকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে শুরু করেছেন তিনি। কামরার অন্যান্য যাত্রীরাও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। হিজলি স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই ট্রেনের মধ্যে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই তরুণী।

    বিষয়টি জানতে পেরেই ট্রেনে কর্মরত টিকিট পরীক্ষক দ্রুত হিজলি স্টেশনে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে খবর দেওয়া হয় খড়গপুর রেলওয়ে মেইন হাসপাতালে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে একজন নার্স-সহ একটি মেডিক্যাল টিম হিজলি স্টেশনে পৌঁছে যায়। ট্রেনটি রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে হিজলি স্টেশনে পৌঁছয়। গৃহবধূকে সদ্যজাত সন্তান সহ ট্রেন থেকে নামানোর তোড়জোড় শুরু হয়। রাত দশটা নাগাদ গৃহবধূকে ট্রেন থেকে নামিয়ে স্টেশনের বাইরে নিয়ে আসা হয়। অপেক্ষমান ওই অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে দ্রুত রেলওয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে মা ও সদ্যজাত কন্যা সন্তান সুস্থ রয়েছেন।

    এদিকে ট্রেনের মধ্যে রাতের কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় হাসপাতালের নার্স ও কর্মীরা যৌথভাবে শিশুটির নামকরণ করেছেন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাত্রি’। দীপিকা ভার্মা নামে হাসপাতালের এক নার্স জানালেন, যেহেতু শিশুটি রাতের বেলায় চলন্ত ট্রেনের মধ্যে ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তাই এই নামকরণ করা হয়েছে। মা ও মেয়ে দু’জনেই সুস্থ আছেন বলে খবর।
  • Link to this news (প্রতিদিন)