চার বছরে আয় ৫৬ লক্ষ, সম্পত্তি ৬ কোটির! গ্রেপ্তার কলকাতা পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার
প্রতিদিন | ০৭ নভেম্বর ২০২৫
অর্ণব আইচ: রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার হাতে গ্রেপ্তার কলকাতা পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার। ধৃত পার্থ চোঙদার, কলকাতা পুরসভার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগে কর্মরত। ধৃতের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগ রয়েছে বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
ধৃত পার্থর আয় এবং সম্পত্তির হিসাবে বিস্তর গরমিল। জানা গিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২১ সালে তাঁর আয়ের তুলনায় সম্পত্তি পাঁচ কোটি টাকারও বেশি পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, চার বছরে পার্থ বেতন পেয়েছেন ৫৬ লক্ষ টাকা। অথচ নামে বেনামে তিনি ৬ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক। একাধিক ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে তাঁর। নিউটাউনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে ২৮ লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কে কোথাও ১০ লক্ষ, কোথাও ২০ লক্ষ, আবার কোথাও ২৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন পার্থ। ধৃতের শ্বশুরবাড়ি মালদহে। শ্বশুর-শাশুড়ি নথি ব্যবহার করেও নাকি কলকাতার একাধিক ব্যাঙ্কে প্রায় ৫-৬টি অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। সেখানে কমপক্ষে কোটি টাকা রাখা রয়েছে। কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ৬টি ফ্ল্যাট। বোলপুরে ৩৬ লক্ষ টাকার বাংলো রয়েছে পার্থর। পার্থর স্ত্রী নামে রিয়েল এস্টেট সংস্থাও রয়েছে। পার্থর ব্যাঙ্কের লকারে ৭৩৪.৮৫ গ্রাম সোনা রয়েছে। জীবনবিমাও রয়েছে পার্থর। একাধিকবার বিদেশযাত্রাও করেছেন তিনি।
ওই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে গত ২০২৩ সালে পুরসভার আধিকারিকের বাড়িতে হানা দেন দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা। প্রায় দু’বছর ধরে তদন্ত চলার পর বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। কীভাবে তাঁর কাছে বিপুল টাকা এল, পার্থ কোনও অসামাজিক কাজ কিংবা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কিনা ? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশা তদন্তকারীদের। কোনও পুরকর্মী অন্যায় করলে রেয়াত করা হবে না, সেকথা আগেই জানিয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেকথা মাথায় রেখে পার্থ চোঙদারের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এদিনই আদালতে পেশ করা হয় ধৃতকে।