অনলাইনে এসআইআর আবেদনে দেরি, চিন্তায় বাইরে থাকা ভোটাররা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
রাজ্যে মঙ্গলবার থেকে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর) শুরু হয়েছে। বাংলা–সহ দেশের ১২টি রাজ্যে প্রায় তিন মাস ধরে চলবে এই প্রক্রিয়া। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ি–বাড়ি গিয়ে ইতিমধ্যেই দ্রুতগতিতে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন বিএলওরা। কমিশনের হিসেব, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই কোটিরও বেশি ফর্ম ভোটারদের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরা। কাজের গতি দেখে বাংলা যে এগিয়ে, সে কথাও জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু চিন্তা বাড়ছে তাঁদের, যারা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে বা বিদেশে রয়েছেন।
কমিশন জানিয়েছিল, বাইরে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক বা প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য থাকবে অনলাইন ফর্ম পূরণের সুবিধা। কিন্তু তিন দিন কেটে গেলেও এখনও শুরু হয়নি সেই পরিষেবা। কমিশনের ওয়েবসাইটেও এখনও অধরা এনুমারেশন ফর্ম। ফলে দূরে থাকা ভোটারদের মনে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। তাঁদের প্রশ্ন, কবে মিলবে অনলাইন ফর্ম? সময় কি শেষ হয়ে যাবে? কমিশন কি বাড়তি সময় দেবে? এই পরিস্থিতিতে কমিশন জানিয়েছে, ডিজিটাল স্বাক্ষর যাচাই–ই অনলাইন প্রক্রিয়া পিছোনোর প্রধান কারণ।
প্রসঙ্গত, ১২ রাজ্যের এসআইআর প্রক্রিয়া বিহারের তুলনায় অনেক জটিল— এমনই সাফাই কমিশনের। তাঁদের বক্তব্য, ভুলভ্রান্তি এড়াতে প্রযুক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করেই অনলাইন পরিষেবা চালু করা হবে। সূত্রের দাবি, এ সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহের মধ্যে অনলাইন ফর্ম প্রকাশ করা হতে পারে।
যদিও কমিশনের একাংশ মনে করছে, যাঁদের পক্ষে সম্ভব, বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিএলওর মাধ্যমে ফর্ম পূরণ করাই উত্তম। এতে ভুলভ্রান্তির সম্ভাবনা কম থাকবে।
এসআইআর শুরু হতেই একাংশের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ, ২০০২ সালের সংশোধিত তালিকায় বহু মানুষের নাম নেই। ফলে আতঙ্কে অসুস্থ পর্যন্ত হচ্ছেন কেউ কেউ। প্রচারিত নানা ভুল তথ্য ঘিরেও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
কমিশন অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ভোটারের নাম তালিকায় না থাকলে তাঁকে নোটিস পাঠানো হবে। এরপর হবে তিন দফা শুনানি। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের সামনে নিজের পরিচয়ের নথি ও তথ্য তুলে ধরার সুযোগ পাবেন ভোটাররা। নথি ও তথ্য সন্তোষজনক হলে নতুন তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
কমিশনের বার্তা স্পষ্ট— ‘এসআইআর মানে নাম বাদ দেওয়া নয়, নাম যাচাই–বাছাই, আর প্রয়োজন হলে নথির ভিত্তিতে নতুন করে অন্তর্ভুক্তি।’
এখন নজর একটাই, কবে খুলবে অনলাইনে ফর্ম পূরণের দরজা, যার অপেক্ষায় দিন-রাত এক করে দিচ্ছেন রাজ্যের বাইরে থাকা অসংখ্য ভোটাররা।