জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পূর্ব ভারতে অঙ্গদানের হার বাড়াতে এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরিকাঠামোয় স্বচ্ছতা ও সমন্বয় আনতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল কলকাতার মণিপাল হসপিটাল। হাসপাতালের উদ্যোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল ‘অর্গান ডোনেশন সামিট ২০২৫’ শীর্ষক এক সম্মেলন। দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ, শল্যচিকিৎসক, প্রশাসনিক কর্তা এবং নীতিনির্ধারকেরা এই সম্মেলনে অংশ নেন।
'অঙ্গদানে সেরা পদ্ধতি' ছিল সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য। বিশেষত, পূর্ব ভারতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একটি কার্যকর অঙ্গদান ব্যবস্থা গড়ে তোলাই ছিল এই আয়োজনের প্রধান লক্ষ্য। এই পুরো আয়োজনের দায়িত্বে ছিল মণিপাল অঙ্গ বিনিময় এবং প্রতিস্থাপন (Manipal Organ Sharing & Transplant)।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রফেসর ড. ইন্দ্রজিৎ সাহা প্রমুখ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ড. (কল) অবনীশ সেটি এবং ড. অয়নাভ দের মতো বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় উঠে আসে অঙ্গদান সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও চ্যালেঞ্জ। ড. অয়নাভ দে জোর দেন সচেতনতার অভাবে। তাঁর কথায়, "অঙ্গদানের মাধ্যমে অসংখ্য জীবন বাঁচানো সম্ভব, কিন্তু এখনও আমাদের দেশে এই বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অঙ্গদান নিয়ে সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও আলোচনা অত্যন্ত জরুরি।"
অন্যদিকে, ড. (কল) অবনীশ সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০২৪ সালে ভারতে মোট ১৮,৯১১টি অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে। এর মধ্যে ৮২ শতাংশ ছিল জীবিত দাতার থেকে সংগৃহীত। একই বছরে, ১,২৮৬ জন ব্রেন ডেড রোগীর অঙ্গ সংগ্রহ করে ৩,৪০৩ জনের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। যদিও সংখ্যাটি বাড়ছে, তবুও প্রতি ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে একজনেরও কম দাতা থাকায় চাহিদার তুলনায় অঙ্গের সরবরাহ এখনও যথেষ্ট নয়।
বিশেষজ্ঞরা একমত হন যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে অঙ্গদান নিয়ে আরও বেশি সচেতনতা ও স্বচ্ছতা তৈরি করা গেলে বহু মূল্যবান জীবন রক্ষা করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, পূর্ব ভারতে মণিপাল হাসপাতালের এই ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যৎের অঙ্গদান ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরিতে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে।