• চিতাবাঘ-হাতির হানার আতঙ্ক নিয়েই উত্তরবঙ্গের বাড়ি বাড়ি বিএলওরা, আশ্বস্ত করছেন বনকর্মীরা
    প্রতিদিন | ০৮ নভেম্বর ২০২৫
  • বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গের চিতাবাঘ ও হাতি উপদ্রুত এলাকায় শুরু হয়েছে এসআইআর। রাজ্যের অন্যান্য জায়গাগুলির মতো এইসব এলাকাতেও বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি ফর্ম নিয়ে যেতে শুরু করেছেন। এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের বনবসতি এলাকায় চিতাবাঘের হামলার ঘটনা দেখা গিয়েছে। ফলে চা বাগান, বনের মধ্যে যেতেও মাঝেমধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এই অবস্থায় বিএলও-দের নিরাপত্তার জন্য বনদপ্তরের তরফেও পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে খবর।

    এলাকা ঘুরে বাড়িতে যাচ্ছেন বিএলও-রা। নির্বাচন কমিশন থেকে সাহায্য না চাওয়া হলেও বনদপ্তরের কড়া নজদারি শুরু হয়েছে নেপাল সীমান্তের মেচি থেকে অসম সংলগ্ন সংকোশ পর্যন্ত জঙ্গল সংলগ্ন চা বাগান ও বনবস্তি এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে ডুয়ার্সের বাতাবাড়ি চা বাগান এলাকার এক বাড়ির গোয়াল ঘরে ঢুকে ছাগল তুলে নিয়ে যায় চিতাবাঘ। বুধবার সকালে ছাগলের দেহ উদ্ধার হলে  চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হড়পা বানের পর মেটেলি, নকশালবাড়ি, লাটাগুড়ি, বানারহাটের রাস্তাতেও চিতাবাঘের দেখা মিলেছে। অক্টোবর মাসে জলপাইগুড়ি জেলার খেরকাটা গ্রামে স্থানীয়দের উপর হামলা চালায় চিতাবাঘ। ফালাকাটার খাউচাঁদপাড়া গ্রামে একটি চা বাগানে হামলা চলে।

    ধূপগুড়ির উত্তর শালবাড়ি গ্রামে চিতাবাঘের হামলায় ১২ বছরের কিশোরের মৃত্যু হয়। রাখাল দেবী চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় চারজন জখম হয়। বন কর্মীদের একাংশের মতে, শিকার ও প্রজননের সময় চিতাবাঘ নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে সাধারণত চা বাগান বেছে নেয়। কিন্তু হড়পা বানে চা বাগানের বিস্তীর্ণ এলাকা বিষাক্ত ডলোমাইটে তলিয়ে যাওয়ায় চিতাবাঘ আশ্রয়স্থল পালটে কোথাও পাকা সড়কের আশপাশে। আবার কোথাও নতুন চা বাগান এলাকায় ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে। এছাড়াও বেড়েছে বুনো হাতির উপদ্রব। প্রায় দিন হাতি ঢুকছে লোকালয়ে। মানুষ-হাতি সংঘর্ষে শুধু অক্টোবর মাসেই অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমনই আতঙ্কের আবহে শ্বাপদ উপদ্রুত ডুয়ার্স ও তরাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় চলছে বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ।

    বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশন থেকে সাহায্য না চাওয়া হলেও জঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দিনভর পেট্রোলিং চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএলওদের কয়েকজন জানিয়েছেন, সমস্যা তেমন কিছু নেই। এসআইআর-এর ফর্ম নিতে জলদাপাড়া, গরুমারা, টুকরিয়াঝার জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা নিজেরাই এগিয়ে আসছেন। কোন রাস্তা ভয়ের সেটা ওরাই জানিয়ে দিচ্ছেন। গরুমারার এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল জানান, হড়পা বানের পর থেকে জঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তাই সমস্যার কিছু নেই। কোথাও চিতাবাঘ অথবা হাতি বার হয়েছে খবর মিলতেই বনকর্মীরা পৌঁছে যাচ্ছেন।  
  • Link to this news (প্রতিদিন)