সম্প্রতি শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটের দূষণ নিয়ে রাজ্যের বন দফতর ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে ভর্ৎসনা করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। রাজ্য জানিয়েছিল, তারা পদক্ষেপ করবে। শুক্রবার বীরভূমের জনপ্রিয় ওই হাটের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে ইঙ্গিত মিলল রাজ্য সরকারের তরফে। বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্হা জানালেন, হাটের জন্য বিকল্প জায়গার কথা ভাবা হচ্ছে।
বন দফতরের জমিতে খোয়াই সংলগ্ন সোনাঝুরির হাটটি আইনত অবৈধ এবং হাটের জন্য জঙ্গলের দূষণ হচ্ছে, এই অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। সরকারি সূত্রে খবর, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাট অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতর। শুক্রবার বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত ‘সিনার্জি ও বাণিজ্য সম্মেলন’-এ মন্ত্রী চন্দ্রনাথ বলেন, “সোনাঝুরি হাট নিয়ে মামলা চলছে। যদি সেটা (হাট) বন্ধ হয়ে যায়, আমরা বিকল্প জায়গার চিন্তাভাবনা করেছি।” ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিংহ প্রমুখ।
চন্দ্রনাথ জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বীরভূমের শিল্পক্ষেত্রে বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বহু বছর বন্ধ থাকা আহমেদপুর চিনিকলের জমিতে গড়ে উঠবে একটি শিল্প পার্ক বা বাণিজ্য উদ্যান। পাশাপাশিই, ইলামবাজার ও লাভপুরে ক্ষুদ্র শিল্প বাজারের কাজ চলছে। এতে স্থানীয় কারিগর থেকে শিল্পীরা সরাসরি উপকৃত হবেন। চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘ইলামবাজারের খাদি দফতরের জন্য ৫ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে চলতি অর্থবর্ষে ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮,৮৭৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে বীরভূমের অংশ ৩,৮৪৯ কোটি টাকা।’’ অনুব্রত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমের দিকে নজর দিয়েছেন। বহু দিন বন্ধ থাকা চিনিকল পুনর্জীবিত হচ্ছে। মন্ত্রী খুব ভাল কাজ করছেন।”
উল্লেখ্য, বর্তমানে সপ্তাহে ছ’দিনই সোনাঝুরির হাট বসে। আবার সোনাঝুরি হাটের পিছন দিকে একের পর এক রিসর্ট, বাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে পরিবেশ আদালতের মন্তব্য এবং রাজ্যের ‘পরিকল্পনা’র কথা প্রকাশ্যে আসার পর সোনাঝুরির হাট নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলার ব্যবসায়িক মহলে।